Category: Poems

  • কাল চক্র

    যুগে যুগে কী নিষ্ঠুর কাল চক্র তলে…
    মানুষের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা
    নিষ্পেষিত হয়,নির্মম নিয়তি?
    মৃত্যুময় জৈবিক চেতনার স্বর্ণদ্বার
    স্হির লক্ষ্য মানবতা নিত্য সনাতন
    বিশ্বমাঝে জীবনের বৈজয়ন্তী গান।
    বীর্যবন্ত প্রেম রঙিন, স্মরণীয় অতীত
    মহীয়ান দিন কল্যাণের…

    অন্ধকারের ভস্মের পরে প্রতিষ্ঠা,
    ভালোবাসার প্রথম সোপান
    তৃষার্ত প্রজাপতির প্রথম চুম্বন
    জীবনের দগ্ধ সিগারেট…
    যন্ত্রণার ব্লাকবোর্ডে এঁকে যাচ্ছি
    আমার পুরনো ছবি,আমার পুরনো কথা।।

  • তুমি আমার

    হ্যাঁ আমি তো তোমারি
    যদিও না মানো তুমি তবুও আমি তোমার
    কারন তুমি যে শুধুই আমার……
    তুমি তে আমি আবদ্ধ
    আমাতে তুমি
    অগোছালো তুমি টা দখল করেছি আমি……

    লিখে নিও নামে তোমার এই আমাকে
    শত অভিমানে ঝরবে মুকুল
    তবুও ফেলে যাবো না তোমাকে……
    ভারি বর্ষনে রেখে দেবো বৃষ্টি ফোটা
    এক চিলতে সুখ রোদে পুড়িও আমাকে……

    তবুও তুমি আমার হয়ে থেকো
    আকুতি গুলো দুষ্টু হাসিতে বেঁধে রেখো
    পাগলামি তে আমাকে বুঝে নিও
    তোমার মাঝে আমাকে ঠাঁই দিও
    ঐ যে,তুমি যে শুধুই আমারি প্রিয়……

    দিন শেষে আলতো করে হাত ধরে নিও
    পথের শেষে আবার কোনো পথ খুঁজে নিও
    এ বাঁধন কভু যাবে না তো ছিড়ে
    হাজার বাঁধা বিপদ এলে পাশে তুৃমি রবে
    ঐ যে তুমি আমার,আমার হয়েই থাকবে……

    তুমি আমার আমি তোমার জানুক সর্ব জনে
    ভুলের পরে ভাসিও দিও গভীর অভিমানে
    তবুও আমি তোমার রবো,তুমি রবে আমার
    সবকিছুর পরে তোমার হাতটি ধরবো আবার
    ভালোবাসার নতুন গ্রাণে ভরবো দুটি মন
    তুমি আমার খুব কাছের অতি আপনজন……

  • মা

    মা,
    তুমি শ্রেষ্ঠ আশ্রয়
    তাইতো,বারবার ফিরে ফিরে আসা
    ক্রমাগত আর্তনাদ
    হৃদয় ফেটে যাওয়া গোঙানিতে
    অস্তিত্বের দাবি
    শেকড়ের সন্ধান।

    ক্রমাগত নির্যাতনে
    তোমার শিরা উপশিরায়
    ক্ষতের স্পর্শ চিহ্ন
    কখনো গর্ভ যন্ত্রণায় কাতর
    কখনো সন্তানের ফিরে আসার আশায় পাথর
    নিয়ন্ত্রণহীন শবযাত্রায় নুয়ে পড়েছ তুমি

    তবু আঁতুড় ঘরে দাওনা মুক্তি
    ব্যর্থ সন্তানেরা ফিরে আসে
    পরাজয়ের চিহ্ন মুখে এঁকে
    শুধু পরাজিত হওনা তুমি
    আর,
    তোমার মাতৃত্ব।।

  • অর্ধ আমি

    এঁকেছো যখন পুরোটা এঁকে দিতে
    হৃদয়ে তো এঁকে নিতে বলিনি
    এক টুকরো ছেঁড়া কাজগেই ঠাঁই দিতে
    পেন্সিলে আঁকা আমিটা কে নতুন করে রূপ দিতে
    গাঁঢ় না হোক আবছা রেখে মুছে নিতে.…….

    অস্পষ্ট করে অর্ধ রূপে সাজালে আমায়
    আমার প্রেম কি অসম্পূর্ণ শিল্পী করেছে তোমায়?
    সম্পূর্ণ রূপদানে ইচ্ছেই ছিলো না যদি
    তাহলে কেনো এসেছিলে জীবনে
    ভালোই যদি না বাসো শেষ অব্দি…….

    এঁকেছো তবুও কিছু টা আমায় নিজের মতো করে
    এটুকুই বা কম কিসের,রবো তো ছেড়া পাতা জুড়ে
    অর্ধ মানবী আমি,বাসতে পারিনি ভালো
    করতে পারিনি প্রেম বিলিয়ে তোমার জীবন আলো
    অযোগ্য বলে গণ্য হয়েছি আমি
    তোমার দেওয়া ভালোবাসার কাছে
    করতে পারিনি বিশ্বাস অর্জন,ভেবেছো সবি মিছে……

    অন্তর আত্না কেঁপেছে আমার তোমার অবহেলায়
    এক চোখে আমার বিষাদের কাজল
    অপর চোখে তে নেই আলো
    অন্ধ ছিলাম তোমার প্রতি,বিশ্বাস ছিলো অগাধ
    ভাবিনি কখনো তোমার থেকে শেষটায় পাবো আঘাত…….

    আজ আমি ছবিতে অর্ধ,হৃদয়ে নেই ঠাঁই
    বিশ্বাসেই মেলেনি মনের জমিনে আশ্রয় হঠাৎ কোথায় যাই..
    হারাই আমি বার বার সেই অচেনা দুঃখের নগরে
    শত ঝরেও ফিরবো না আর তোমার গড়া ঘরে
    দুঃখ ভরা,ক্লান্ত মনে কষ্টের উল্কা উড়ে
    আঘাতের ব্যথায় মন আমার ডুকরে কেঁদে মরে……

  • আমাদের গল্প

    আমাদের গল্পে
    সুখ অপ্রত্যাশিত
    অসুখ প্রতিনিয়ত!

    আমাদের গল্পে
    বিশ্বাস অবিরত
    অবিশ্বাস ক্ষত!

    আমাদের গল্পে
    ভালোবাসা অফুরান
    ভালোথাকা অসম্পূর্ণ!

    আমাদের গল্পে
    হৃদয় ভরা আবেগ
    বাঁধা শুধু বিবেক!

    আমাদের গল্পে
    অমাবস্যা চলমান
    জোসনা যেখানে ম্লান!

    আমাদের গল্পে
    প্রকৃতি বেহেমিয়ান
    আকুতি শুধু চলমান!

    আমাদের গল্পে
    শুরু ছিলো আন্তরিক
    শেষটা হয়ত মর্মান্তিক!

  • তুমি আমার অন্যরকম অনুভুতি

    তুমি মানুষ টা আমার এক অন্য রকম অনুভুতি
    হৃদয়ের আষ্টেপৃষ্টে জড়ানো তুমি
    খুব করে অনুভুত হয় তোমাকে
    বলতে না পারার মতোই এক কম্পনে
    মিশে গেলে কি ভাবে যেন হৃৎস্পন্দনে……

    আমি বুঝতে পারি অনুভবে তোমাকে
    কিন্তু কি বুঝতে পারি তা জানিনা
    হয়তো প্রকাশের দোরগোড়ায় আসে না অনুভব
    আসলে অনুভুতিটা কি লিখা সম্ভব?
    লিখবে যে মানুষ অনুভূতির কথা
    আসলেই সে যে খুব আজব……

    তুমি অনুভব,অনুভূতি,তুমি কল্পনা
    তুমি অন্তঃবৃত্তের কেন্দ্র বিন্দু
    তুমি অস্তিত্বে মিশে থাকা অজানা অনুভূতি
    প্রতিটি হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিক এক কম্পন
    কম্পিত হৃদয়ের অনুকথার অনুচারী রচনা
    অনুভবের খেয়াল জুড়ে তোমারি পদচারনা……

    তুমি এ কেমন অনুভুতি
    যে অনুভূতিতে মিশে রয় তোমার অস্তিত্ব
    অদৃশ্য তোমাকেও খুঁজে পাই অনুভবের আস্তরনে
    হঠাৎ করে হারাই তোমার ভাবনায় অনুভবে অনুক্ষণে
    এ অনুভূতির অনুভব আছে
    নেই কোনো প্রকাশের পথ
    নেই কোনো লিখার ভাষা
    আছে শুধুই অনুভূতির দেয়ালে কল্পনায় লেখা
    কিছু বলা,না বলা ছোট ছোট আশা……

    তুমি আমার অনুভবের ছোট্ট অনুভূতি
    কম্পিত ঠোঁটের না বলা কিছু মধুর গীতি
    অল্প করে বলবো তোমায়
    তোমার নামের অনুভূতি গুলো তারা করে আমায়……
    চায় তোমাকে বার বার অনুভূতির শহরে
    ভাবনারা দূরে গেলে মন গুমরে মরে
    তুমি ফিরে এলে অনুভূতির শহরে
    ভালো লাগার বাতাস বহে যে অনুভূতির শহর জুড়ে

  • তুমি আর আমি

    তুমি আমার প্রেমিকা নও
    তাই বলে, ‘ভালোবাসি না’,– এমন তো বলিনি কখনো!
    যার আঘাতে জেগে ওঠে আমার অস্তিত্ব, আমার অহং
    তাকে ভালোবাসি না, তাই কি হয়!

    তুমি আমার বন্ধু নও
    তাই বলে, শত্রু হবে–এমন তো হতে পারে না!
    যার অনুপস্থিতি আমার মূল্যকে তুল্য করতে দেয় না
    তাকে শত্রু ভাববো, তাই কি হয়?

    তুমি আমার ছায়া নও
    তাই বলে স্বতন্ত্র কায়া নও,—এমন তো নয়!
    তোমার ছায়ার সঙ্গে লড়াই যখন আমার হৃৎস্পন্দন
    তখন তোমার অস্তিত্ব স্বীকার করবো না, তাই কি হয়?

    তুমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নও
    তাই বলে আমরা দ্বন্দ্বহীন,—এমন তো নয়!
    তুমি লড়াই করছো তোমার জন্য, আমি আমার জন্য
    একই গন্তব্যের পথিক আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী? তাই কি হয়?

  • ঘাস ফড়িংয়ের খোঁজে

    একটি বর্ণীল ঘাস ফড়িং এর খোঁজে,
    আমি এফোড় ওফোড় করে ফিরেছি,
    পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর দক্ষিণ,
    নেই নেই কোথাও নেই,
    শুধু হাহাকার, বেদনার উদগীরণ।

    সিংহল সুমাত্রা হয়ে হিমালয়ের পাদদেশে,
    সমুদ্রের অতল বেয়ে বালিয়াড়ির সীমানা পর্যন্ত,
    নেই নেই কোথাও নেই,
    দুদণ্ড সুখের ঘাস ফড়িং,
    আছে শুধু মানবতার উত্তপ্ত প্রহসন।

    সাগর বুকে মাছুম শিশুর রক্তের আহাজারি,
    প্রকৃতিতে মিশে আছে অনাহারী আর্তনাদ,
    বিবস্ত্র মানবতা ধূম্রতায় মুখ লুকায়,
    নেই নেই কোথাও নেই,
    সহমর্মিতার এতোটুকুও পাতা আঁচল।

    পথের সাথী অসহায় অলিদের অস্ফুট আর্তনাদ,
    ডাস্টবিনে থাকা সদ্য প্রসূত শিশু,
    বিবর্ণা ধরিত্রী অবাক চোখে দেখে,
    নেই নেই কোথাও নেই,
    শান্তির চোখে এক ফোটা কাজল।

    স্বার্থের ঘোড়া টগবগিয়ে ছুটে,
    রক্তের বন্ধনে হিমোগ্লোবিনের বড়ো অভাব,
    নিরাপত্তা নেই মায়ের আঁচল ছায়ে,
    নেই নেই কোথাও নেই,
    মক্ষী চিলের থাবা গ্রাসে অশ্রুজল।

  • প্রেমের অনুরক্তি

    অভিমানী বর্ষণ বুকের জমিনে
    প্রেমকে সিক্ত করে,
    সুজলা প্রেম বিকশিত হয়
    আপন মনের ঘরে।

    ঝরে সে নির্ঝর আবেগের মাল্য হাতে,
    কাছে টেনে নিতে সুখের অদৃশ্য বন্ধন,
    শুধু মুখে ফুটে না মনের চন্দ্রমল্লিকা
    হৃদয় গেঁথে নেয় অপূর্ণ ক্রন্দন।

    আড়াল করে ভালোবাসা চোখের কার্ণিশে
    বিচলিত শতদল বিহ্বল হয়ে,
    মনের কথা চাপা পড়ে যায়
    অনুরাগ হারায় দগ্ধতা সয়ে।

    তবুও যায় না ছেড়ে থাকা তারে
    মনের আকাশ জুড়ে বিষাদের বসবাস,
    আলো আঁধারীর চোরাবালি মাঝে
    বিবশ অনুরক্তি গড়ে দুঃখের আবাস।

    মনের আকুতির কাছে অসহায় অভিমান
    মুখ লুকিয়ে হাসে অন্তঃপুরে,
    ভালোবাসা তার শুভ্র পেখম মেলে
    হৃদয়ে জড়িয়ে রয় কল্পপুরে।

  • নিঃসঙ্গতায়

    একা নিঃসঙ্গ রাত
    আর একটা কিছু না পাওয়া মানুষ।
    দুজনেই মিলেমিশে একাকার হয় সেই আশ্চর্য নীরবতায়।

    ফেলে আসা মেঠোপথের দুপাশে,
    নয়তো কোন চিলেকোঠার ঘরে গোপন রাখা অনুভবে;
    দুজনেই মিলেমিশে ভাসে এক রাজ্য অভিমানে চুপচাপ।

    ঝিঁঝিঁপোকারদের উৎসব বাড়ে;
    হৃদয়ের অতল অতলান্ত ছুঁয়ে বাড়ে অনুভবের রক্তক্ষরণ,
    যদিও দুজনেই একাকিত্ব নাড়েচাড়ে জলশিশিরে টুপটাপ।

    তারাদের ভীড়ে কোথাও আটকে হয়তো উদাসীন দৃষ্টি,
    মেঘেদের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে মনেরও খানিকটা দিগবিদিক ;
    রাতের নিঃশ্বাসে দীর্ঘশ্বাস মেখে দিয়ে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে কখনও নিশ্চুপ।

    বেঁচে থাকার মানে,
    হয়তো নিঃশব্দে নিঃশেষ হতে হতে…
    হয়তো কিছু পাওয়ার এক আকাশ অপেক্ষায়;
    রাত আর মানুষ দুজনেই মিলেমিশে পথে নামে অখণ্ড সেই নীরবতায় হঠাৎ হঠাৎ।