বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো৷ লাবন্য পুকুর ঘাটে বসে বর্সি দিয়ে মাছ ধরছিলো সেই দুপুর তিনটা থেকে৷ বেশ কিছু পুটি আর তেলাপিয়া মাছ ধরেছে৷ লাবন্যর বয়েস ১৩/১৪ তার সাথে আছে তার বড় ফুফাতো বোন লতা আর তারই কাছাকাছি বয়েসি চাচাতো ফুফাতো ভাইবোন ৩/৪ জন, আর আশ পাশের বাড়ীর কয়েকজন৷
বড় ঘর থেকে লাবন্যের জেঠি মা ডাকাডাকি করছে, সবাই ঘরে চলে এসো৷ সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে৷ এ সময় বাইরে থাকা উচিৎ নয়৷ খারাপ বাতাস এসময় ঘুরোঘুরি করে৷ সবাই ঘরে যাও….এসব বলতে বলতে উনি কাজের বুয়াকে দিয়ে হাঁস মুরগী গুলোকে তাদের ঘরে ঢুকাচ্ছেন। আর জোরে জোরে বলছেনঃ লাবন্য, ও লাবন্য তোর চুলটা বেঁধে নে৷ এতো বড় চুল ছেড়ে ঘুরে বেড়াসনে মা৷ যা ঘরে যা৷
হঠাৎ লাবন্য লক্ষ্য করলো দূরে একটা কুচকুচে কালো বিড়াল বসে আছে একটা কামরাঙ্গা গাছের নীচে। বিড়ালটা খুব নাদুস নুদুস৷ ততোক্ষনে মাছ ধরা শেষ৷ লাবন্য ভাই বোন দের সাথে হাসি গল্প করছে আর মিষ্টি মুড়ি খাচ্ছে৷
আবার জেঠি মা বললো, (আদর করে কখনও কখনও জেঠি মা তাকে রূপ্সি বলে ডাকতো)। রূপ্সি….. তোর চুল বেঁধে নে৷ চুল বেধে নে৷ তোকে না বলেছি চুল না বেঁধে গাছ তলায় যাবিনে…খবরদার, তোর ওই খোলা চুলে কামরাঙ্গা গাছের কাছে যাবি নে৷ ওদিকে একটা খারাপ জিনিস আছে৷ চলে আয়৷ ঘরে চলে আয়৷
জী…… জেঠি মা৷ এইতো এক্ষুনি চুল বেঁধে নিচ্ছি৷
বলেই সে তার কোমর সমান চুলটা ঝটপট খোপা করে নিলো৷
আর মিষ্টি মুড়ি খেতে খেতে সে বিড়ালটার দিকে এগিয়ে গেলো কামরাঙ্গা গাছের নীচে৷ সেখানে গিয়ে সে বিড়ালটাকে কাছে ডাকলো, চু, চু, চু করে৷ বিড়ালটাও কাছে এলো৷ সে মুটভরা মিষ্টি মুড়ি দিলো৷ বিড়ালটা গপ গপ করে খেয়ে নিলো৷ যেন আরও খেতে চাইছে তাই লাবন্যের মুখের দিকে তাকাচ্ছে৷৷ লাবন্য দেখছে, লক্ষ্য করছে বিড়ালটার আচরন অন্য রকম৷ সে খুব মজা পেলো৷ সে আরো মুড়ি দেবে বলে পুকুর ঘাটে ফিরে এসে দেখে সবাই ঘরে চলে গেছে৷ এখন বিড়ালটার জন্য তার খুব মায়া লাগছে৷ সে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে বিড়ালটা নেই৷ সে আবার পেছনের দিকে যাবে বলে যেই পা বাড়ালো, পেছন থেকে জেঠি মা তাকে ডাকলোঃ মা এ সময়ে এতো গাছ গাছালির দিকে যাস নে। আয়, ঘরে আয়।
চলবে…