তুমি

Photo of author

By Fatema Hossain

এই তুমি, শুনতে পাচ্ছ! কোথায় থাক এখন!
জান কি, তোমার নাম না জানা ভালোবাসা
এখন কোথায় আর আছেই বা কেমন?

সে ছিলো মানুষ হিসেবে উদাস টাইপের
অনেক টা আত্মকেন্দ্রিক ও বটে,

হাঁটছে, চলছে, তবে আগে পিছে কে চলেছে তার,
সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই ছিলো না তখন!

শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতেই
এতোদিনের বয়কাট চুলগুলো ঘাড় থেকে
বেয়ে একটু একটু করে পিঠে নামতেই
স্কাট টপ আর ফ্রক ছেড়ে পাজামা আর
জামার সাথে ওড়না পরা ধরেছে সবে সবেই!

স্কুলে যাবার পথের ধারে কিশোর কিংবা
পুরুষেরা অপলকে অযথাই থাকে চেয়ে!

তখনই মা বললেন, মাটির দিকে তাকিয়ে
সোজা স্কুলে যাবে ইতি উতি চাইবেনা,
বাসায় ফিরবে মাথা নিচু করে সব সময় ওভাবেই
কেউ ডাকলে তাকাবে না, কিছু দিলে কখনো তা নেবে না

সেই সময় থেকেই এইভাবে চলেফেরা ছিলো তার।
এজন্য অনেকের কাছে পাত্রীও হয়েছিল প্রশংসার!

তবে ভুল বুঝা মানুষ গুলো তখন থেকেই জুড়ে দিয়েছিল নামের সাথে তার আত্ম-অহংকারীর তকমাটা।

কালো মেয়ে, তাও দেখ কত্তো অহংকার!
কিন্তু তারা জানতোনা,গায়ের রংটা তার কাছে
কখনো ছিলো না বিষয় কোনো বিড়ম্বনার!

এভাবেই চলে যাচ্ছিল জীবন, একটা পূর্ণ বয়সে
তুমি এসে প্রথম বুঝিয়ে দিলে তাকে জীবনের ছক
সব সময় এক থাকে না,কখনো কখনো হঠাৎ করেই তা পালটে যায়।
কথা গুলো তাকে ফেলেছিল নতুন ভাবনায়!

তুমি ও দূর থেকে একটু একটু করে তাকে
বদলে দিলে, জানালে ভালোবাসা অবিনশ্বর নয়
সময় ও পাত্র ভেদে তা ঠিকই বদলায়!

আত্মকেন্দ্রিক অহংকারী খেতাব প্রাপ্ত মানুষটি
তোমার কাছে খেতাব পেল সে এক নতুন,
‘কেয়ারফুল কেয়ারলেস বিউটি”মনের গহীনে
খেতাবটি ধরে রেখেছে সে আজও করে যতন!

এভাবেই একটু একটু করে কেয়ার করাতে শিখিয়ে
প্রিয় লেখকের প্রেমের গল্পের প্রেমে পড়িয়েছিলে!
রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ পাওয়া মনে
বরষার কদম ফুল নতুন করে ফুটিয়েছিলে!

তারপর প্রায় দিন ভর দুপুরে দুজন দু’প্রান্তে
কতশত বিষয়ে চলেছে ফোনালাপ!
এভাবে একসময় শর্ত ভেংগে দেখা করার
করেছিলে আব্দার
আর ,বিশেষ রঙের বসনে দেখতে চেয়েছিলে
শুধুই একবার!
তারপর টলাতে না পেরে কোনো এক অভিমানে
চলে গেলে নাম ঠিকানা না দিয়েই!

কিন্তু সে তখনও কেবলই বন্ধুত্বেই ছিলো সন্তষ্ট!
আর যাইহোক ভালোবাসার অভাব ছিলো না
কখনই তার জীবনে অন্তত!

এখন খুঁজলেও আর পাবেনা তাকে ,
ছয় সংখ্যার নাম্বারটা যে জমা পড়ে গেছে
তার নির্দিষ্ট অফিস ঘরে অথবা নিবন্ধিত
হয়েছে অন্য কোনো নামে অন্য কারো ঘরে!

তবে যেতে যেতে খানিকটা বদলে
দিয়ে গেছ তুমি সেই সে মানুষটিকে,
স্বভাব ও পাল্টে গেছে কিছু।

এখন সে খুঁজে ফেরে আশে পাশে ইতিউতি,
আর মনোযোগ দিয়ে কান পেতে রয়,
সেই সে কন্ঠস্বর শোনার, যা শুনে হয়তো
কোনোদিন চিনে নিতে চায় ঠিক সে তোমায়!

ফাতেমা হোসেন
১লা মার্চ, ২০২২ইং