Select Page

বেলাশেষের গোধুলী

বেলাশেষের গোধুলী

বুঝি জীবন রাঙাতে হতেই হয়।

দেড় হাজার ফেসবুক বন্ধুদের সবাইকে নিশ্চয়ই চিনতে পারার কথা নয়। ভার্চ্যুয়াল সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এমনটাই হয়। অনুভুতির ছোঁয়া বিহীন ভার্চ্যুয়ালী কানেক্টেড। যাই হোক, প্রতিদিন প্রতিক্ষণ নোটিফিকেশনে কিছু না কিছু থাকেই – যেমন, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট, গ্রুপে জয়েনিং রিকোয়েস্ট, পেইজ লাইক, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রায় সময়েই এগুলো ইগনোর করা হয়ে থাকে আর এমনি একটা পেইজ লাইকের রিকোয়েস্ট ইগনোর করতে যাবো অমনি দেখি আমার কোনো এক ফেবু বন্ধু একটা পেইজ লাইক দেবার রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। বন্ধুর প্রোফাইল চেক করবার ইচ্ছে হলো। ডিসেন্ট প্রোফাইল! মনে একটু দুষ্টুমি খেলে গেলো। ইনবক্সে জানতে চাইলাম, – “তুমি তোমার একটা পেইজে লাইক দেবার রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছো। লাইক দিলে কি তোমার কোনো লাভ হবে?”। পেইজে লাইক দিলে পেইজের ওনারের লাভ আছে সেটা আমার জানাই ছিলো তবুও ইচ্ছেকৃতভাবে খোঁচাটা দিয়েই দিলাম। বন্ধুটি মনে হয় একটু রাগ হয়েই উত্তর দিলো, – “না না, আসলে আমি আমার সব ফেবু বন্ধুদের একসাথে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি। তুমি ইচ্ছে করলে এড়িয়ে যেতে পারো।

“দেখলাম ব্যাপারটা ভালো দেখায় না। আমি পেইজ লাইক দিয়ে বন্ধুটিকে উত্তরে জানালাম, -“আমি লাইক দিয়ে দিয়েছি। মনে কিছু কোরো না। মজা করে তোমায় মেসেজ দিয়েছিলাম। আমি আমার ফেবু ওয়ালে মাঝে মাঝে অল্প সল্প লিখি বা স্ট্যাটাস দেই। দুই একটা পোস্টে লাইক দিয়ে ধার শোধ দিও।”

ফেবু বন্ধুটির আত্মসম্মানে লাগলো মনে হয়। আমার বেশ কিছু পোস্টে পরপর লাইক দিয়ে গেলো। আমি হাসলাম…

ব্যাপারটা ভুলেই গেছিলাম। অনেকের সাথে এতো আজেবাজে অর্থহীন মেসেজিং হয়েছে যে কাছের বন্ধুদের খুজেই পাইনা। তাই বেশ কিছুদিন পর একদিন আমি আমার ইনবক্স ক্লিন করার কাজে হাত দেই। একটা একটা করে দেখছি আর আর্কাইভে পাঠিয়ে দিচ্ছি। হঠাত সেই বন্ধুর মেসেজ আর্কাইভ করতে গিয়েও থেমে গেলাম। কয়েক মাস হয়ে গেছে – এর মাঝে আর কোনো মেসেজিং হয়নি। এরপর একদিনও হায়-হ্যালো বলা হয়নি। ভাবলাম, আজ একবার হ্যালো বলি। মেসেজ দিতে গিয়েও থেমে গেলাম। মনে হলো আগে একবার তার ফেবু ওয়ালটা ঘুরে আসি। কিছু লাইক কমেন্ট করি। তারপর যদি রিয়েকশন দেখায় তবেই না হয় ‘হ্যালো’ বলবো।

বন্ধুটির ফেবু ওয়াল ভ্রমন করছি। বেশিরভাগই বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের ফটো পোস্ট। বেছে বেছে গ্রুপ ছবিতে লাইক না দিয়ে ওর সিঙ্গেল ছবিতে লাভ রিয়েকশন দিলাম। মনের মাঝে অর্থহীন দুষ্টুমি চলছে। এভাবে ভ্রমন করতে করতে হঠাত একটা শেয়ার্ড ফটো পোস্টে আমি থেমে যাই যেটা কিনা সেন্ডেলের ওপর আল্লাহর নাম আরবীতে স্পষ্ট করে লেখা। Angry রিয়েকশন দেই এবং একটু হালকা করে উপদেশ দিয়ে কমেন্ট করি –

এই ধরনের ছবি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকো। খারাপ জিনিস শেয়ারের মাধ্যমে প্রচারে সহযোগিতা করাটাও আমি অন্যায় মনে করি। আশা করি আমাকে আমার মত দেবার জন্য ভুল বুঝবে না।

কিছুক্ষনের মধ্যেই কমেন্টের উত্তর চলে আসে –

আমি ভুল বুঝিনি বন্ধু। আমার শেয়ার করার উদ্দেশ্য হল, কেউ জুতা কেনার আগে যেন চেক করে নেয় আল্লাহ্ র নাম বা আরবী লেখা সেখানে না থাকে। আল্লাহ্ অন্তরযামী। সুতরাং আমার শেয়ার করার উদ্দেশ্য যেনেই তিনি আমাকে পুরস্কৃত করবেন।

এবার আমি কমেন্টে ফিরতি উত্তর না দিয়ে ইনবক্সে চলে গেলাম। তাকে ‘সরি’ বললাম। আমাদের বেলাশেষের গোধুলী রঙ ফিরে পেলো। কথা চলতে থাকলো অনেকক্ষণ যেনো আমারা আগে থেকেই বেশ পরিচিত। সেই থেকে শুরু…

About The Author

Alam M

I’m Alam, a tireless seeker of knowledge, occasional purification of wisdom, and also, coincidentally, a WEB DESIGNER. I am good at WordPress Malware removal and Google Page Speed. I’m a Mathematician and love to play with numbers. I do write blogs occasionally.