সুন্দরবনের গল্প

Photo of author

By Razib Ahmed

“আপনি তো দেখি মাঝে মাঝেই জঙ্গলে ঘুরেন ফিরেন। তা দু’ একটা গল্প শোনান না দেখি”
ভারী ঝামেলায় পড়ে যাই। জঙ্গল তো শখে বেড়াবার জায়গা নয়। এই যেমন গতবার সুন্দরবনে গিয়ে মহা ফ্যাঁকড়া হয়েছিলো। শীত আর কুয়াশায় সব ঢাকা। সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না মোটেও, পাখ পাখালি দেখবো কোত্থেকে? লঞ্চশুদ্ধু মানুষের মুখ বেজার। সকালের সাফারি না হলে তো দিনটাই মাটি। আমার কিন্তু বেশ লেগেছিলো। কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। চরাচরে অদ্ভুত নিঃস্তব্ধতা। লঞ্চ অ্যাংকর করবার পরে সবাই যে যার মতন ডেকে ব্রেকফাস্ট সারছে, আর আমি চায়ের কাপ হাতে ব্রীজে চলে এসেছি। কুয়াশা খানিকটা পাতলা হয়েছে এখন। প্রথম আলোর মিঠে ফলাটা হয়ত খানিক বাদেই শিশিরে ভেজা গাছের পাতায় পড়ে ঝিকিয়ে উঠবে। নিঃস্তব্ধতা ভেঙ্গে কুয়াশার আড়াল থেকে একটা বনমোরগ ডেকে উঠলো। আহাঃ ঢাকার এই ইঁট পাথরের পাঁজায় অমন অনুভূতি কি আসবে? জঙ্গল তো অনুভূতির ব্যাপার। এখানে গল্প আসবে কোত্থেকে? মনের কোনে আঁতিপাঁতি করে খুঁজলাম। নাঃ তেমন কোন গল্প নেই। তবে দু’ একটা ঘটনা যে নেই তা বলবো না। যারা জঙ্গল ভালোবাসেন তারা লেখা ধরে এগোতে পারেন।

ঘটনাটা সুন্দরবনেরই,শরণখোলা রেঞ্জের। মাত্রই জঙ্গলে দীর্ঘ, ক্লান্তিকর হাইকিং সেরে, নাকে মুখে কিছু গুঁজে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছি। এমন সময় দলনেতা হাঁক দিলেন, টাইগার টিলার দিকে একটা “ছোট্ট হাঁটা” দেবার জন্য। যারা আজ দুপুরে জঙ্গলে হাইকিং মিস করেছেন তাদের জন্য। আমি ঐ দলে পড়ি না, তবুও দলনেতার অনুরোধে রাজী হয়ে গেলাম। যাই হোক, বোট যখন আমাদের ঘাটে নামিয়ে দিলো তখন বিকেল ঢলে এসেছে। হঠাৎ মনে পড়লো আমার আসরের নামাজ তখনও পড়া হয়নি। কেউ একজন বুদ্ধি বাতলে দিলো, সামনেই চাঁদপাই রেঞ্জের বিট অফিস। ওখানে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা না থেকেই যায় না। সন্ধ্যের খানিকটা মুখেই নেমেছি, হিসেব করে দেখলাম কোনোভাবেই নামাজ শেষ করে দলের বাকীদের সাথে “ছোট্ট হাঁটা” শেষ করে মগরেবের আগে ফিরতে পারবো না।

তথাস্তু!
দলনেতা নিপাট ভদ্রলোক। আমাকে আশ্বস্ত করলেন ফেরার পথে তিনি আমাকে তুলে নিয়ে যাবেন। সুতরাং দলের সবাইকে বিদায় জানিয়ে আমি বিট অফিসের দিকে পা বাড়ালাম।
জঙ্গলের বিট অফিস যেমন হয় আর কি, পুরনো নোনাধরা দেয়াল। বহু বছরের সাইক্লোন আর জলচ্ছ্বাসের ক্ষতচিহ্ন বহন করে চলেছে। কাঠের জানালার কবাট আর মরচেধরা শিক দেখলে সহজেই বয়স অনুমান করা যায়। বারান্দায় চোঙ্গামুখো এক লোক বিড়ি ফুঁকছিলো। ওযুর জায়গাটা কোথায় জিজ্ঞেস করতেই আপাদমস্তক ভালো করে দেখে উত্তর দিলো, “ওযুর তো কাছাকাছি তেমন কোনো জায়গা নেই। তবে নাক বরাবর পশ্চিমে গিয়ে উত্তরের জঙ্গলে ঢুকবেন। ওখানে বড় একটা দীঘি আছে”।

সূর্যাস্তের বড় একটা বাকী নেই। নদীতে কুয়াশা নামছে। আমি তড়িঘড়ি পা চালালাম। দীঘি খুঁজে পেতে অসুবিধে হলো না। বিট অফিস থেকে খুব একটা দুরে নয়। সূর্যের আলো গাছের মাথায় উঠে গেছে। নীচের ঝোপঝাড় গুলোয় সাঁঝের আঁধার। ঝিঁঝির ডাকে একদম সরগরম পুকুরপাড়! আমি পাঁক-কাঁদা এড়িয়ে কিভাবে ওযু সারবো ভাবছিলাম। শাণ বাঁধানো ঘাট মতন আছে একটা, এক কালে হয়তো ব্যবহারযোগ্য ছিলো। কালের বিবর্তনে সিমেন্ট আর ইঁটের বড় একটা চাঙড় ছাড়া ওর আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বিপজ্জনক ভাবে একপাশে কাত হয়ে আছে। ওখানে ভারসাম্য রেখে ওযু করাটাও রীতিমতো কসরতের ব্যাপার। সময় অল্প, যা থাকে কপালে ভেবে আমি ওযু করতে লেগে গেলাম। কুমির থাকবে না জানি, কিন্তু বিকট দর্শন মনিটর লিজার্ডের ব্যাপারে আমার এলার্জি আছে। যতই নিরীহ হোক, আমি এদের হাত থেকে দশ হাত দূরে থাকতে চাই। উঁহু, ভূল হলো। পঞ্চাশ হাত হলেই বরং ভালো। একবার ক্লোজ শট নেবার জন্য কাছাকাছি গিয়েছিলাম। ভীষণ অলস আর শ্লথ গিরগিটি টার কাছাকাছি যেতেই কি ভয়ংকর দ্রুত ছুটে হারিয়ে গেলো নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ঐ জিনিস পঞ্চাশ হাত দূরে থাকাই কাম্য। ছোট আকারের কচুরিপানায় ভরা পুকুর। একহাতে ওরই খানিকটা ঠেলে সরিয়ে জায়গা করে নিলাম। যেই না মুখে পানি দিয়েছি ওমনি আমার অস্বস্তি হতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ ঠাহর করবার চেষ্টা করলাম, কিসে অস্বস্তি হচ্ছে! কেউ কি আড়াল থেকে আমার দিকে নজর রাখছে? সূর্য ডুবে যাবে পনেরো/কুড়ি মিনিটের মধ্যেই। বাঘের জেগে ওঠার সময়। তাহলে কি কোন বাঘ ঝোপের আড়াল থেকে আমার ওপর নজর রাখছে? খেয়াল হলো ঝিঁঝিঁর ডাক বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ নীরবতার জন্যই কি অস্বস্তি হচ্ছে?

কিন্তু ঝিঁঝিঁর ডাক হঠাৎ বন্ধ হলোই বা কেন? আশেপাশে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। নিস্তব্ধ জলা, ঝোপঝাড় আর বনভূমি। খানিক আগেও এ ডাল, ও ডালে কয়েকটা কাঠবেড়ালী লাফাচ্ছিলো। শীতের শেষ, কয়েকটা কাজলচোখ বেনেবউয়ের ডাকও শোনা যাচ্ছিলো, এখন সেটাও বন্ধ। অবশ্য বাঘ আড়াল নিয়ে থাকলে সেটা দেখার মতন চোখ আমার হয় নি। অগত্যা কেউ আমাকে চুপিসারে লক্ষ্য করছে এমন অস্বস্তি নিয়েই ওযু সারতে হলো।

ফেরার পথে কোন অঘটন ঘটলো না। নামাজ শেষে বিট অফিসার চায়ের নিমন্ত্রণ করলেন। ভদ্রলোক সদালাপী। নাকের নীচে নিরীহ দর্শন পাতলা একজোড়া গোঁফ ঝুলছে। চেহারায় বিট অফিসের মতোই বহু বছরের অভিজ্ঞতার ছাপ। শরণখোলায় বছর পাঁচেক আগে পোস্টিং হয়েছে। পরনে হাফহাতা শার্ট আর লুঙ্গি। চায়ের ফরমায়েশ দেবার মিনিটখানেকের মধ্যেই চা হাজির। পায়ের ওপর পা তুলে আয়েশ করে সিগারেট ধরালেন ভদ্রলোক। চা-সিগারেট-আড্ডা চললো একসাথেই। জঙ্গলের আড্ডায় নতুনদের যা হয় আর কি। অবধারিতভাবেই বাঘের প্রসঙ্গ এসে পড়ে।

আমারও ব্যতিক্রম হলো না। জিজ্ঞেস করে বসলাম।
: বাঘ দেখেছেন?
ভদ্রলোক নিরাসক্ত হাসি দিলেন।
: বাঘ কিভাবে দেখবো বলুন? আমাদের ডিউটি সন্ধ্যায় শেষ আর তার ডিউটি সন্ধ্যার পরেই শুরু। দিনের বেলায় মাঝে সাঝে বেরোয় বটে, কিন্তু এত ডেন্স কাভার নিয়ে থাকে যে আপনার দশফুটের মধ্যে চলে এলেও টের পাবেন না।

আশ্চর্য হলাম।
: এত লম্বা চাকরি জীবনে একবারও দেখেন নি?
ভদ্রলোক চওড়া হাসি দিলেন।
: আপনি দেখছি সাংবাদিকদের মতই নাছোড়বান্দা। বাঘের কথা উঠলে লোকজন প্রশ্ন করেই যেতে থাকে। আমিও চুপচাপ হ্যাঁ, হুঁ এর মধ্যেই সেরে ফেলি।

বাঘের রাজত্বে থাকি, না দেখে উপায় কি বলুন?

সুন্দরবনে বাঘ দেখা রীতিমতো দুরহ ব্যাপার। বাঘ দেখার ঘটনা জানার কৌতূহল আছে ষোলআনাই, এদিকে মগরেবের ওয়াক্ত হয়ে গেছে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাঘ দেখেছে এমন ঘটনা কেউ রসিয়ে বলতে চায় না। পেট থেকে কথা বের করবার জন্য নানান কসরত করতে হয়, নিতান্তই ঝক্কির ব্যাপার। বরং আমার মতন যারা দেখেন নি তারাই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ঢোল বানায়।

ভদ্রলোক বাঘের ব্যাপারে নিতান্তই বেরসিক। শেষ চেষ্টা চালালাম।
: এই বিটে তাহলে বাঘ বড় একটা দেখা যায় না, কি বলেন?
: যায় বৈ কি! ওই যে টাইগার টিলা আছে, ওখানেই একটা বাঘিনী আছে। গত বছরই দুটো বাচ্চা দিয়েছে।

এই তো পরশুদিনের ঘটনা। চোরাচালানিরা গাছ কাটছে এমন একটা খবর পেয়ে আমরা রেকি করতে গেলাম। আমরা মানে আমি, আমার এসিস্ট্যান্ট আর দুইজন বনরক্ষী। টাইগার টিলার কাছাকাছি পৌঁছে আমরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে খোঁজ করছি ঠিক এই সময় কানে তালা লাগানো ভয়ংকর গর্জনে হৃদকম্পন বন্ধ হবার যোগাড়। একজন বনরক্ষীকে দেখলাম পাগলপারা হয়ে ছুটে আসছে। আমি কোনরকমে একটা ব্ল্যাংক ফায়ার করেই দে ছুট। পেছন পেছন দু’জন বনরক্ষী।

একদম ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়। একদম এই বীট অফিসে এসেই থেমেছি। ভাবতে পারেন?
: আর আপনার এসিস্ট্যান্ট?
: বলছি……. ভদ্রলোক পানের ফরমায়েশ দিয়েছিলেন বোধকরি। একজন পান দিয়ে গিয়েছিলো।
সেটার ভেতরে কতটা চুন আর সুপুরি আছে সেটা নিয়ে খানিকটা বেগড়বাই করে পানের খিলি মুখে চালান দিয়ে আবার শুরু করলেন…. মুক্তার সাহেব (কাল্পনিক নাম) যে আমাদের সাথে নেই সেটা একটু পরেই টের পেলাম। ভয়ও লাগলো, কারণ বাঘে তাড়া করলে তাকে বিট করে আমাদের পক্ষে পালিয়ে আসা সম্ভব না। যদি না সে অলরেডি কাউকে ধরে থাকে। মুক্তার সাহেব কি ধরা পড়লো কি না সেই টেনশনে আমি অস্থির। আবারও টাইগার টিলায় যেয়ে বাঘের মুখে পড়ার ইচ্ছে নেই কারও। কিন্তু অবস্থা এমন যে যেতেই হবে। কাজেই আবারও রওনা দিলাম। এবারে তিনজনই একসাথে। একটু পর পর চেঁচিয়ে মুক্তার সাহেবের নাম ধরে ডাকছি, আর কান পেতে শুনছি কোন সাড়া পাওয়া যায় কি না। এভাবেই চললো খোঁজ। আমি মোটামুটি আধঘন্টার মধ্যেই শিওর হয়ে গেলাম মুক্তার সাহেবের কপাল খারাপ। এখন বীট অফিসে ফিরে গিয়ে লোকজন যোগাড় করে আসতে হবে। এই সময় আমার কানে হালকা আওয়াজ এলো, কে যেন ডাকছে। সবাইকে চুপ করতে বলে আবারও কান পাতলাম। মুক্তার সাহেবই।

গল্পের এই সময় পাশের রুমে কালো মতন এক ভদ্রলোক যাচ্ছিলেন, হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেলেন। খালি গা, গায়ে গামছা দেখে অনুমান করলাম গোসল সেরে এসেছেন। গল্পের মাঝখানে ফোঁড়ন দিলেন ভদ্রলোক,
: স্যার, আমি কিন্তু আপনাদের মতন পালিয়ে যাই নি। গাছে উঠে বসে ছিলাম। আপনারা যেই দৌড়টা দিলেন। হা হা হা।

অনুমান করলাম ইনিই মুক্তার সাহেব। বীট অফিসার ভদ্রলোক একটু উঠে বারান্দার জানালা দিয়ে পানের পিক ফেললেন, তারপর দাঁত বের করে হেসে বললেন,
: তুমি মিঁয়া যেই ভয় দেখাইলা! আমি তো ভাবছিলাম কিছু হয়ে গেলে ভাবীকে কিভাবে কথাটা বলবো….

আমার দিকে তাকিয়ে পরিচয় করিয়ে দিলেন….. এই যে ইনিই মুক্তার সাহেব। নাও মুক্তার মিঁয়া, তোমার গল্প বলো ভাইজানরে।

তারপর একগাল হেসে উঠে যেতে যেতে বললেন, আমাকে আজকে মাফ করতে হবে ভাই, আমাদের পেট্রোল করার বোটটার বেহাল দশা, একটু দেখে দিতে বলছে ক’দিন ধরেই। ডকে দেবো নাকি জোড়াতালি দিয়েই চলবে একটা ডিসিশান নিতে হবে….
: স্যার ওর আয়ু শেষ, আপনাকে আগেও বলছি…

মুক্তার সাহেবকে কপট রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে গেলেন বীট অফিসার ভদ্রলোক। যাবার আগে বললেন, তুমি তো মিঁয়া বইলাই খালাস। বাজেটে না থাকলে কিভাবে ডকে দিবো? নিজের পকেট থিকা?!…

মুক্তার সাহেব অমায়িক মানুষ। চা খেয়েছি কি না জিজ্ঞেস করলেন, খালি কাপ দেখেই বোঝার কথা যদিও। মগরেবের নামাজে যাবেন, অনুমতি চাইলেন।

আমিও নামাজ পড়বো, ওঠার সময়ও হয়ে এসেছে।

বিদায় নিলাম। সাবধানে ফেরার উপদেশ দিলেন ভদ্রলোক।
: বাঘ তো এদিকে আসে না, কি বলেন?….আমি নিশ্চিত হতে চাইলাম।
: প্রায়ই জল খেতে আসে এখানে। বাচ্চা সহ, উত্তরে যেই বড় দীঘিটা আছে না? ওখানে।
আঁতকে উঠলাম। ওখানেই একটু আগে ওযু সেরেছিলাম।
: একা ফিরতে পারবেন তো?

সাঁঝের আঁধার নেমে গেছে। যদিও আমার দলনেতা বন্ধু আমাকে তুলে নিয়ে যাবেন বলেছিলেন। তার এত দেরি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এত লোক ম্যানেজ করতে গিয়ে ভুলে যাওয়াও দোষের কিছু নয়। মুক্তার সাহেবের কথা আমার অহমে লাগলো। হাত নেড়ে বললাম ঘাট তো কাছেই, আমার অসুবিধে হবে না। নামাজ শেষে যখন বীট অফিস থেকে বেরোলাম তখন চাঁদের আলো ছাড়া দ্বিতীয় কোন আলো নেই। সামনেই এক পশলা জঙ্গল। বাঘ যদি ওখানে গুঁড়ি মেরে পড়ে থাকে আমার বাপেরও বোঝার সাধ্যি নেই। নদীর তীর ঘেঁষেই ফিরবো ঠিক করলাম। সেদিন কিভাবে একা একা ঐ রাস্তা দিয়ে ফিরেছিলাম এবং অন্ধকার মাড়িয়ে আধঘন্টা পরে আবারও বীট অফিসে ফিরে এসেছিলাম সে আরেক কাহিনী।

আজকে আপাতত এইটুকুনই থাক।

পরিব্রাজক
কটকা, শরণখোলা রেঞ্জ, সুন্দরবন
ডিসেম্বর, ২০২০