Tag: কবিতা

  • ঘুঙরু

  • খুঁজে ফেরা

    অসম্ভব যত্ন, মায়া দিয়ে,
    অনুভুতির ছোঁয়া দিয়ে
    শব্দের কথা বুনে বুনে
    জীবনের প্রহরগুলো,
    সাদা খামে লুকোনো
    যে চিঠি পাঠালো
    তা তোমার জন্য হয়তো
    বাক্যের ছিলো
    কথার ছিল?
    আমার কাছে তা ছিল
    অক্ষরহীন,শব্দহীন
    শুধুই সাদা কাগজ।

    তোমার কাছে আকাশ যখন
    সাত রঙে, রঙিন হয়ে
    গাঢ় নীলের শরৎএর
    আবাস হলো,
    তখন আমি শুধুই
    সাদা কালো মেঘে ভাসি
    ধূসর কোনো রোদ্রু ছায়ায়।

    তোমার যখন
    মুক্ত স্বাধীন আকাশ
    অসীম স্বপ্নীল পৃথিবী।
    অনাবিল খুশি নিয়ে
    ভালোবাসার উচ্ছাস।
    তখন আমি
    পরাধীনতার শিকল ভাঙি।
    বাতাস কেটে
    আকাশ খুড়ে
    মুক্তি খুঁজে ফিরি
    সারা দিনরাত।

    © ফারহানা সুমনা

  • হেরে যাওয়া সময়ের সাথে অসহায় সময়ের কথন

    • প্রেমে পড়েছ বুঝি?
    • হুম্
    • কার? তোমার সাথে তোমার নিজের?
    • হুম্, ভাবছি আরেকবার প্রেমে পড়বো খুব করে
      ভুলে যাব ভুল করা
      ভুলে যাব ভূলমন্ডল
      ভুলে যাব অতীত
      নতুন করে গড়বো আবার
      নতুন কথায় সাজিয়ে
    • তবে তাই হোক, তাই হোক, তাই হোক…
    • হবেনা গো হবে না
      কপালে সবকিছু সবার যে থাকেনা
      একসময় তুমি সময়ও হাত ছেড়ে দিয়ে পালাবে
      চৈতের দুপুরে
    • তাই তো বলেছি, নিজের সাথে প্রেম করো।
      আমি সময় পালাবো না গো
      পালাবো না
      আসুক চৈতের দুপুর কিংবা হিমবাহ
    • কথা দিতে নেই
      সময় তো এমনিতেই পালায়।
      তারচেয়ে বরং তুমি,
      তুমি সময় হয়েই থাকো আষ্টেপিষ্টে মন মননে
      চৈতের দুপুরে হিমবাহে
      এইবার এইভাবেই নিজের সাথে নিজেই প্রেমে পড়বো
      মন দেবো, মন নেবো
      আর তুমি আঁইকা দিও ছবি আমার
      মন মননের!
    • এখন একটু যাই গো সখি রঙতুলি আনিতে
      তুমি আমার-তোমার মনের রঙের শাড়ি পইরা
      দাঁড়াইয়া রইয়ো পথপানে
      আমি সময় রইবো সদা সনে তোমার হয়ে
      আঁধার নামিলে কুপিখানা জ্বালিও
    • আচ্ছা, ফিরে এসে দেখতে পাবে একটা লাল রঙের বউ
      একপ্যাচে লাল শাড়িতে
      কতদিন হইয়ে গেলো
      বউ নামটা যে আমার ধুলোর চাদরে ঢাইকা গেছে!
      তুমি সময় আইসো
      ধইরো হাত, আঁইকা নিও তোমার রঙতুলির ক্যানভাসে
      আর ডাইকো বউ বউ বউ কইয়া
      জানো সময়, এই বউ নামে সে যেন সেই কবে ডেকেছিল!
    • আমি সময় আসিবো সখি
      ডাকিতে পুরোনো নামে –
      বউ বউ বউ…
      দিবো ভুলাইয়া
      সাজাইতে-সাজাইতে আঁকাইতে-আঁকাইতে মম ক্যানভাসে
      কুপির আলোতে
    • হুম্

    ©আলম – ৬ এপ্রিল ২০২৫ইং, বিকেল ৪টা ৪২মি.

  • কাগজ থেকে আলাদা হয়েছে কালি?

  • চেনা অচেনা ধূসর রঙ

    চেনা অচেনা ধূসর রঙ

    চেনা অচেনার আসা-যাওয়া বিরামহীন
    দেখা পাই না আত্মায় বাস আমার সেই চেনা
    নিজের সাথে নিজে কিছু কথা বলি আর ভাবি
    চেনা-তোমরা যদি কিছু শুনতে পাও

    আমার কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হয়ে গেছে বলে
    কথাগুলো আমার
    শুনতে পাওনা বুঝতে পাওনা
    আমার গায়ের রং বদলে গেছে
    চিনতে না পাওয়া ধূসর মলিন রঙে

    কি হবে শুনে, কি হবে আমায় চেনার ভান করে
    আমি তো অভিযোগ করিনি, করবোও না
    অভিমানটুকু আমার
    অভিমানী হয়ে থাকুক না বেঁচে আমার মাঝে

    ভালোই হয়েছে
    অচেনা হতে দিয়েছো এই আমি কে
    অচেনা হতে পেরেছি আমি
    ভালোই তো আছি
    এভাবেই ভালো থাকতে শিখে গেছি
    বদলে যাওয়া ধূসর রঙের মানুষ হয়ে
    ফিসফিসিয়ে নিজের সাথে নিজে কথা বলে
    আমি শুধু আমার হতে পেরেছি
    আমারই আমি
    শুনশান নিরবতা
    কোন ভিড় নেই
    নেই কোন চেনা-অচেনার আনাগোনা…

    ©আলম – ১২ আগস্ট ২০২৩ইং, রাত ৯টা ৩১মি.

  • ঘড়ি কিনি, সময় কেনা হয় না

    —একটি কবিতা—

  • যোগ্যতা

    আমার একটাই যোগ্যতা,
    আমি ভালোবাসতে জানি।
    এর বেশি কিছু আমি পারিনা,
    আমার কেশ দীঘির জল,
    সাঁতরে নিতে পারো, যদি তুমি চাও।
    আমি খুব ছিমছাম , গুছিয়ে যত্ন করে রাখি,
    আমার ভালোবাসার মানুষ গুলোকে,
    মনের শো কেসে।
    সেখানে কারো হস্তক্ষেপ,
    আমি মোটেও সহ্য করবো না।
    সেখানে আমি অগ্নি রূপ ধারণ করি।
    যা আমার তা শুধু আমারি,
    আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা,
    আমি যে শুধু ভালোবাসতে জানি
    এছাড়া আমার আর কোন যোগ্যতা নেই।
    আমি ধর্য্যশীল না হলেও,
    আমায় দিয়ে করিয়ে নিতে পারো
    তোমার যত কাজ ,শুধু ভালোবাসা দিয়ে।
    তাতে আমার ক্লান্তি নেই।
    ঝগড়াটে না হলেও
    ঠোঁট কাটা বলতে পারো,
    তোমাদের ইংরেজি ভাষায় স্ট্রেইটফরোয়ার্ড।

    আমি পড়াশোনায় ওতো ভালো নই
    তবে রান্নাবান্নায় আমি পারদর্শী।
    একজন বাঙালি স্থূলদেহী
    শ্যামলা বরণ নারী আমি,
    অবশ্য সমাজ আমায়,
    বিয়ের বাজারে কতটুকু দাম দিবে জানি না।
    শুধু ভালোবাসা, রান্না, আর
    আগলে রাখা দিয়ে কী
    আমি সংসার ধর্ম করতে পারবো
    কিনা তাও জানি না।
    তবে আমি হরফ করে বলতে পারি,
    আমার বুক গভীরে,
    অনেক ভালোবাসা আছে,
    তার ভিতরটায় তুমি ডুব দিলে
    অন্ত খুঁজে পাবে না।
    আমার একটাই যোগ্যতা
    আমি শুধু ভালোবাসতে জানি ।

  • নির্জনতায় তুমি আমি

    নির্জনতায় সঙ্গী করে চাঁদ কে তুমি ডাকো
    চাঁদের সাথে আমায় তুমি সঙ্গী করে রেখো
    মিষ্টি আলোয় বসবো দুজন পাশাপাশি হয়ে
    গল্প কথায় রাত কাটাবো সময় যাবে বয়ে।

    নিশি চাঁদের মিষ্টি আলোয় দেখবো নয়ন ভরে
    শক্ত করে হাতটি আমার তুমি রেখো ধরে,,
    চাঁদনী রাতের আলোয় ছুঁয়ে মৃদু বাতাস বয়
    চোখের তারায় মিষ্টি মধুর ভাব বিনিময় হয়।

    নিঝুম রাতের পাখি হয়ে রবো মোরা জেগে
    গভির রাতে গল্প কথায় ভাসবো দুজন আবেগে
    রাতের পরে রাত কাটাবো তোমার সাথে বসে
    মনের কথা বলবো তোমায় জমানো যতো আছে।

    রাতের শেষে চাঁদ যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে
    সুখ তারাটা তখন ছুঁটে মেঘের তলে তলে
    আলো দিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমের দেশে ছুটে
    চাঁদের সাথে সেও যে লুকায় মেঘ সীমানার পটে।

    ভোরের আলো ফুটে উঠবে পূব আকাশের গায়
    এবার বুঝি ফিরতে হবে নির্জন নিলারায়
    বিদায় দাও আমায় তুমি মিষ্টি করে হেসে
    আবার হবে দেখা মোদের স্বপ্ন আঁকা দেশে।

    চাঁদ তারার সাথে মোরাও এলাম ফিরে নীড়ে
    ভোরের আলো ছুঁইবে এবার খুব ধীরে ধীরে
    আবার এসো প্রিয় তুমি আগামী কোনো রাতে
    বলব কথা তোমার সনে হাত রেখে হাতে।

  • কাল চক্র

    যুগে যুগে কী নিষ্ঠুর কাল চক্র তলে…
    মানুষের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা
    নিষ্পেষিত হয়,নির্মম নিয়তি?
    মৃত্যুময় জৈবিক চেতনার স্বর্ণদ্বার
    স্হির লক্ষ্য মানবতা নিত্য সনাতন
    বিশ্বমাঝে জীবনের বৈজয়ন্তী গান।
    বীর্যবন্ত প্রেম রঙিন, স্মরণীয় অতীত
    মহীয়ান দিন কল্যাণের…

    অন্ধকারের ভস্মের পরে প্রতিষ্ঠা,
    ভালোবাসার প্রথম সোপান
    তৃষার্ত প্রজাপতির প্রথম চুম্বন
    জীবনের দগ্ধ সিগারেট…
    যন্ত্রণার ব্লাকবোর্ডে এঁকে যাচ্ছি
    আমার পুরনো ছবি,আমার পুরনো কথা।।

  • মা

    মা,
    তুমি শ্রেষ্ঠ আশ্রয়
    তাইতো,বারবার ফিরে ফিরে আসা
    ক্রমাগত আর্তনাদ
    হৃদয় ফেটে যাওয়া গোঙানিতে
    অস্তিত্বের দাবি
    শেকড়ের সন্ধান।

    ক্রমাগত নির্যাতনে
    তোমার শিরা উপশিরায়
    ক্ষতের স্পর্শ চিহ্ন
    কখনো গর্ভ যন্ত্রণায় কাতর
    কখনো সন্তানের ফিরে আসার আশায় পাথর
    নিয়ন্ত্রণহীন শবযাত্রায় নুয়ে পড়েছ তুমি

    তবু আঁতুড় ঘরে দাওনা মুক্তি
    ব্যর্থ সন্তানেরা ফিরে আসে
    পরাজয়ের চিহ্ন মুখে এঁকে
    শুধু পরাজিত হওনা তুমি
    আর,
    তোমার মাতৃত্ব।।