অনেকদিন হলো তবুও মনেহয় এইতো সেদিন। এপ্রিলের এগারো তারিখে ছিল জাহাঙ্গীরনগরে এডমিশন টেষ্ট। সবকিছুই শারমিনের এখনও মনে আছে। খুব সকাল সকাল বাসা থেকে রওয়ানা দিল জাবি’র উদ্দেশ্যে। সকাল দশটায় পরীক্ষা শুরু। নয়টার ভিতরেই পৌছে গেল।এত মানুষ!! ভীড়ে পায়ে কি যে ঠোকাঠুকি অবস্থা। ডেইরী গেটে বিভিন্ন জেলা সমিতির ব্যানারে দোকান খুলে ছাত্র -ছাত্রীরা বসে আছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের স্টলও আছে। আছে বিভিন্ন বিভাগের স্টল। আছে চায়ের স্টল থেকে শুরু করে রকমারি কসমেটিকসের দোকান। যেন মেলা বসেছে। চারিদিকে উৎসব উৎসব ভাব।
শারমিন ছাত্র ইউনিয়নের স্টলে ঢুকে পরলো। বেশ কয়েকজন কর্মী বসে আড্ডা দিচ্ছে। ছিপছিপে একহারা বাবরিওয়ালা একটা ভাইয়ার কাছে গিয়ে এডমিট কার্ডটা দিয়ে কোথায় ওর সীট পরেছে জানতে চাইলো। ভাইয়াটি সীটপ্লান দেখে বললো কলা ভবনের ২০৭ নম্বর রুমে এবং কিভাবে যেতে হবে বলে দিল। শারমিন কাছুমাছু করে দাড়িয়েই রইলো দেখে ভাইয়াটি জানতে চাইলো, কোন সমস্যা আছে কিনা! শারমিন বললো, আমিতো কিছুই চিনি না। কেমনে যাব?
ভাইয়াটি তখন একটি ছেলেকে ডেকে বললো,পল্লব তুমি ওকে কলা ভবনের ২০৭ নম্বর রুমে দিয়ে এসো। শারমিন সবার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে গেল।
যেতে যেতে ওদের কিছু কথা হলো।
তোমার নাম কি?
-শারমিন।
বাড়ি কোথায়?
-আরামবাগ
কোথায় পড়াশোনা করেছো?
-আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে
কোন বিভাগে?
-সায়েন্স
তোমাদের বাসায় ফোন আছে?
-কেন?
যদি থাকে তবে আমি তোমাকে রেজাল্ট জানাতে পারব। আমার নাম পল্লব। আমি ইকোনোমিক্সে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। তুমি ভর্তি হতে পারলে আমি হবো তোমার এক বৎসরের সিনিয়র।
-ফোন আছে। আমি আপনাকে রোল নম্বর ও ফোন নম্বর দিচ্ছি। আপনি জানালে আমার খুব উপকার হবে।
কথা বলতে বলতে ওরা কলা ভবনের ২০৭ নম্বর রুমে চলে এলো। শারমিন ওর রোল নম্বর ও ফোন নম্বর পল্লবকে দিল। পরীক্ষার পরে ওর সাথে দেখা করবে বলে পল্লব বিদায় নিলো।
চলবে…