Select Page

প্রথম দেখায় আমার মা বাবা দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন

প্রথম দেখায় আমার মা বাবা দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন

ছবিতে আমার প্রিয় মা ও বাবা। তাদের জীবনের কোন এক আনন্দের মুহূর্তে তোলা দুটি ছবি। দুটি ছবি আলাদা সময়ে তোলা। এক এক ছবি তাদের জীবনের এক এক অংশ।

ছবিতে আমার প্রিয় মা ও বাবা

বাবা মায়ের জীবনের অনেক গল্প শুনেছিলাম তাদের মুখে। তাদের বিয়ে টা ছিল আরেক ইতিহাস। বাবা রাজনীতি করতেন আর মা ছিলেন ব্যবসায়ী বাবার আদরের বড় মেয়ে। আমার মা খুবই রূপবতী একজন নারী। আমার মাকে প্রথম দেখেই আমার দাদী এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে সাথে সাথে তিনি আমার মাকে তার ছোট ছেলের বউ করবেন বলে মনে মনে পন করে বসলেন। কারণ আমার দাদীর বড় ছেলে অলরেডী বিবাহিত ছিল। আমার বাবা তখনও অবিবাহিত। দাদী আমার মাকে দেখে সরাসরি আমার নানার কাছে বিয়ের প্রপ্রোজাল দিলেন। আমার নানা প্রথমেই নাকচ করে দিলেন। একেতো মেয়ে কেবলমাত্র class ten পড়ে, তার উপর ছেলে আবার করে রাজনীতি। কিছু তেই এরকম ছেলের সাথে মেয়েকে বিয়ে দিবেন না।

আমার দাদী নাছোড়বান্দা কিছুতেই এই মেয়ে কে হাত ছাড়া করবেন না। দাদী আমার নানাকে বললেন আমার মাকে না নিয়ে তিনি তার নিজের বাসায় ফিরবেন না। আমার নানা কে কথা দিতে হবে তিনি তার মেয়েকে তার ছোট ছেলের বউ করার অনুমতি দিবেন তাহলে তিনি তার নিজের বাসায় ফিরবেন। নাহলে তিনি বাসায় ফিরবেন না। আমার দাদীর ইচ্ছার কাছে আমার নানা পরাজিত হলেন এবং বিয়েতে রাজি হলেন।
তখনও আমার বাবা মা একে অপর কে দেখেননি। আমার নানা শুধু আমার দাদীর ইচ্ছার কাছে পরাজিত হয়ে আমার বাবা কে না দেখেই বিয়েতে রাজি হলেন। তারপর আরেক ইতিহাস বিয়ে পাকাপাকি হওয়ায় পর আমার বাবা রাজনীতিক কারনে জেলে ঢুকলেন। আমার বাবা জেলখানায় তখনও বাবা মায়ের সামনাসামনি দেখা হয়নি কথা হয়নি। বাবা জেলে যাওয়ায় নানা বেঁকে বসলেন। বললেন এমন ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে তিনি দিবেন না। তখন নানার কাছে আমার দাদী এসে বললেন পৃথিবীর সব কিছুর বিনিময়ে হলেও তিনি আমার মাকে তার ছেলের বউ করবেন। আবার ও আমার নানা আমার দাদীর ইচ্ছার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

আমার বাবা মায়ের প্রথম দেখা হয়েছিল জেলখানায়। আমার নানা তার আদরের মেয়েকে নিয়ে জেলখানায় গিয়ে দেখা করিয়েছিলেন তার হবু জামাতার সংগে। প্রথম দেখায় আমার মা বাবা দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। তারপর বাবা জেল থেকে বের হলেন। বাবা মায়ের মধুর মিলন হল।তাদের মধ্যে অনেক অমিল ছিল তারপর ও তারা একে অপর কে অনেক ভালোবাসতেন। আমার মার সাথে রাগ করে আমার বাবা এক মুহূর্ত থাকতে পারতেন না। তেমনি মা ও বাবার উপর রাগ করে বেশি সময় থাকতে পারতেন না। জীবনে আমার বাবা মায়ের উপর অনেক ঝড় ঝাঁপটা গেছে তবুও তারা জীবনের শেষ দিন ও একসাথে ছিলেন। একে অপরের হাত ধরে জীবন পার করেছেন। অনেক ভালোবাসি বাবা মা তোমাদের।

About The Author

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *