শেষ কবে তোমার উপর অভিমান করেছি, ভুলে গেছি…..
নিজস্ব একটা আকাশ তৈরি হয়ে গেলে
মনে হয় মানুষ ভুলে যায় অভিমানের কথা,
উপেক্ষার কথা, অবহেলার কথা…..
কুয়াশা মোড়ানো সকালে এককাপ ধোঁয়া ওঠা
চায়ের সাথে চুমুকে চুমুকে পান করে নেয়া যায় নিঃসঙ্গতাও।
রহস্যের একটা দেয়াল তুলে দেয়া যায় অনায়াসে
শঙ্কিত শহরের চারিদিকে……
হিসেবি খাতার হিসেব মেলাতে গিয়ে কে জানে হয়তো
খরচা করে ফেলেছি নিবিড় আবেগটুকুও…..
শীতের বিবর্ণ পাতার মতো ঝরিয়ে দিয়েছি অপেক্ষাটুকুও…..
বুকের শহরটায় বুঝি অনুভূতির নামে গড়ে উঠেছে ইট-পাথরের দালান…..
জানিনা আর কখনো হবে কিনা সবুজের অবগাহন…..
আসলে আজকাল আর কোনোকিছুই তেমন ভাবায়না,
তোমার হাসি, তোমার কষ্ট,
তোমার রাগ অভিমান কোনোটাই না…….
হয়তো একটু স্বার্থপর কিংবা একটু স্বতন্ত্র হয়ে গেছি…..
জানিনা, হয়তো জোড়ালো ভালোবাসার বাঁধনটা
দৃঢ় হয়েছে কিংবা হয়েছে আগল ছাড়া…….
শেষ কবে তোমাকে কষ্ট দিয়ে কেঁদেছি রাত জেগে নির্ঘুম,
ভুলে গেছি……
হয়তো নিস্পন্দ প্রেমের শেষ ধাপটুকু পেরুলে কান্নার শিশিরগুলোও জমে যায় বরফের মতো……
মনে নেই শেষ কবে বিষন্নতা গায়ে মেখেছি…….
একান্ত নিজের আকাশটায় স্বচ্ছন্দে উড়তে গিয়ে
মাঝে মাঝে মুঠোয় পুড়ে কিছু নক্ষত্র আনা যায়……
আর সেই নক্ষত্রের চাদরে মুড়িয়ে
হয়তো ভুলে থাকা যায় দীর্ঘশ্বাসগুলোও……
আলোকিত নিরিবিলি দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে
একাকী থাকা যায় নিজের সাথে নিজে…..
শুধু কি তাই….!
বিরহবিলাস নামের কাগুজে শব্দগুলোকে প্রতিদিন
সংসার নামের বোকাবাক্সের রান্নার চুলায় পুড়িয়ে
দিব্যি ভালো থাকা যায়……
দুঃখ, অপমান, গ্লানিবোধটুকু ব্যালকনির গাছগুলোতে পানি দেওয়ার সময় অনায়াসেই ধুয়ে ফেলা যায়…..
আর হেডফোন লাগিয়ে শ্রেয়াঘোষাল গানে মনকে ভিজিয়ে নেয়া যায় খুব সহজেই……
তাই শেষ কবে তোমার উপর অভিমান করেছি মনে পরেনা….
মনে থাকার কথাও না…..
যেদিন থেকে বদলে গেছে নদীর গতিপথ সেদিন থেকেই আসলে কমেছে জলের কল্লোলধ্বনি……
কমেছে অযাচিত ঢেউয়ের বাড়াবাড়িও,
এক সমুদ্র অভিমানের বিশাল গ্রন্থ,আমার একান্ত আকাশজুড়ে ছড়িয়ে দিয়ে ভুলে থাকা যায় সব…….
এই মাঘের হিমকরা রাতেও যে আর তোমাকে চাইনা,
শুধু চাই এককাপ ধোঁয়া ওঠা চা, যার সাথে চুমুকে চুমুকে পান করে নেয়া যায়
আমার সকল অভিমানের পান্ডুলিপি….