অনুভব

Photo of author

By Ashim Ranjan Barua

ভালই তো ছিলাম। বিগত কয়েকদিন ধরিয়া কিছু জিলাপী এবং দুচারটা রসগোল্লা খাইবার পর মনে হইল অনেকদিন দেখা হয় না , এইবারে রক্তের শর্করার (সুগার) লেভেলটা চেক করি।

শুধু শর্করার মাত্রা কেন দেখিব? রক্ত যখন দিতেই হইবে কিডনির অবস্থাটাও দেখিয়া লইতে দোষ কোথায়? শর্করা কিছুটা বেশী হইবে জানি তবে ক্রিয়াটিনিন ( কিডনি পরীক্ষার টেস্ট) একটু বেশী হওয়াতে টনক নড়িয়া বসিল। পরীক্ষার ফলাফল পরিবারে চিন্তার কালো মেঘ ঘনীভূত হইল। আবারো নিয়ম কানুনে আবদ্ধ হইয়া চলিবার শপথ করিলাম।

মেয়েরা বলিল যেহেতু আমেরিকায় যাইতেছ তাই চেকআপটা এইবার করাইয়া নিও।নিউইয়র্কে মেজ মেয়ের জিম্মায় আছি। একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে আসিলাম। প্রথমেই একটি বিরাট ফর্ম পূরন করিতে হইল। উহা জমা দিবার প্রায় অর্ধ ঘন্টা পরে আমাকে একটি ঘরে ডাকিয়া নিল। এইখানে একজন নার্স আমার অসুবিধার ইতিহাস সহ পালস্ , ব্লাড প্রেসার, ওজন এবং উচ্চতা লিপিবদ্ধ করিয়া আবার রিসিপশনে পাঠাইয়া দিল। এবারেও প্রায় অর্ধঘন্টা পরে একজন নবীন ডাক্তারের দেখা পাইলাম। রোগের ইতিহাস জানাইতে গিয়া আমার ঠাকুরদাকেও স্মরণ করিতে হইল। তবে তাহা নিশ্চয় রোগ সংশিষ্ট।

নিজে ডাক্তার হইলেও তাহা পুরোপুরি চাপিয়া গিয়া সাধারণ রুগীর অভিনয় করিতে পারিয়া নিজেকে অভিনয় শিল্পী ভাবিতেও তেমন কুন্ঠাবোধ করিলাম না। ডাক্তার সাহেব সময় লইয়া বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করিল। সবকিছু কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ করিয়া বলিল, ‘ বসের সাথে আলাপ করিয়া আসি’। ভাবিলাম আমাকে সিনিয়র কারো কাছে পাঠাইবে। মনে মনে খুশী হইলাম। কিন্তু তাহা হইল না। এই ডাক্তারই আমার শেষ গন্তব্য! তবে তাহার ব্যাবহারে মুগ্ধ হইলাম। রুগীর প্রতি ডাক্তারের ভালো ব্যাবহার মানুষকে কতখানি আনন্দ/ আশ্বাষ প্রদান করে তাহা বিদেশের মাটিতে বসিয়া সরেজমিনে অনুভব করিলাম।