ভয়ে দিশেহারা হয়ে রোজি চিৎকার করে উঠল, ভুত! ভুত!
বখতিয়ারের হাতের লাঠি পড়ে গেল । চোখ তুলে তাকা্লো, সেই চোখে আলো জ্বলছে ।
দুজনে দৌড় মেরে পাশ কাটিয়ে চলে গেল । কিছুটা পথ পেরিয়ে আসার পর দেখল সামনে তারকাটার বেড়া। পেছন ফিরে তাকালো মঈন । দেখতে পেল অনিতা শহীদ, বখতিয়ার আরো অনেকে হাত বাড়িয়ে ওদের পেছন পেছন আসছে।
মঈন কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, আমাকে মের না শহীদ ভাই, আমাকে ক্ষমা কর।
শহীদ বলল, তোমাকে ক্ষ্মা করা যাবে না ”
” আমি তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি ।”
” তুমি আমাদের পরিচয় জেনে ফেলেছ। তোমাদের মরতে হবে।”
” না শহীদ ভাই, এভাবে আমাদের মেরনা ”
ওরা এগিয়ে আসছে । রোজি বলল, শিগগির তার কাটা পার হয়ে হয়ে যান।
মঈন তারকাটা পেরিয়ে যাবার চেস্টা করল। হঠাৎ কে যেন ওদের ধাক্কা মারল। মঈন পড়ে গেল তার কাটার ওপর। রোজি হুমড়ি খেয়ে পড়ল মঈনের শরীরের ওপর। মঈন চিৎকার করে উঠল।
রোজির হাত ছিলে গেছে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে বলল, তাড়াতাড়ি উঠুন।
মঈন বলল, আমার চোখ—–
” কি হয়েছে আপনার চোখে ”
” আমার চোখে তারকাটা ঢুকে গেছে ”
” উহ মা, এখন কি হবে ”
” আমি অন্ধ হয়ে গেছি রোজি ”
” না , এ কিছুতেই হতে পারে না।”
মঈন আর পালাবার চেস্টা করে না । দুহাতে চোখ চেপে ধরে সে কাঁদছে। শহীদ , বখতিয়ার, অনিতা সবাই হাসছে। প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে সেই হাসি। এগিয়ে আসছে ওরা । এক পা দুই পা করে।
হঠাৎ টর্চের আলো পড়ল রোজির শরীরে। কারা যেন আসছে। সেই টর্চের আলোয় দেখতে পেল প্রেতাত্মারা বাতাসে মিলিয়ে গেছে। কারো কোনো সাড়া নেই।
আলো জ্বালিয়ে বুয়া এলো । মঈনের চোখ গড়িয়ে আসা রক্ত দেখে সে বিস্মিত হয়ে বলল, কি হইছে ভাইজান। আপনার চোখে রক্ত ক্যান ?
মঈন উত্তর দিল না। সে অনুভবে বুঝতে পারে দূরে দাঁড়িয়ে আছে জ্যোতিষী মা। তিনি স্নেহময়ী কন্ঠে বলছেন , ভাগ্যকে কেউ বদলাতে পারেনা বাছা । যা লেখা আছে ঘটবেই। এক মিনিট আগেও না এক মিনিট পরেও না।
সমাপ্ত