Select Page

নির্বাসিতা

নির্বাসিতা

আজও এ শহরের প্রতিটি অলিগলি খুঁজি,
কত রকমের নাম ধরে ডাকি,
তবুও কোনো সাড়া মেলে না, সাড়া দেয় না তো কেউ,
মনের মধ্যে জেগে ওঠে এক বিমূর্ত শব্দ,
এক বিমর্ষতার ঢেউ,
ঘুরপাক খায় অজান্তে মনের অলিন্দে-
রক্তের সাথে মিশে প্রবাহিত শরীরের শিরা উপশিরা, ধমনিতে,
মস্তিস্কের নিউরন অনুরণনে জাগ্রত সদা,
তবুও তোমাকে আমি কি নামে ডাকি আজ- তুমি কি তবে নির্বাসিতা?

কোথায় লুকিয়ে নিয়েছো নিজেকে,
কোন আড়ালে, কোন অচেনা পুরীতে,
কোন সুখের অন্বেষণে তুমি সদাই উচাটন,
রাতের শহরে আমি বার বার চিৎকার করে ডেকে ফিরি-
নির্বাসিতা, নির্বাসিতা বলে।
ঘুমন্ত শহর, কেউ জেগে নেই, কেউ জাগে না,
রাতও বুঝি ঘুমিয়েছে অচেতন ঘুমের নেশায়,
দু-চোখ জুড়ে জেগে থাকে অনিদ্রার ঘোর,
পরিচিত সব বাড়ির দরজা জানালায়—-
করাঘাত করে ডাকতে থাকি নির্বাসিতা, নির্বাসিতা বলে—-
কেউ কোনো উত্তর দেয় না,
শুধু কথা বলে ওঠে দরজা জানালার পর্দা গুলো নড়ে-চড়ে,
বলে, ও নামে কেউ থাকে না এখানে।

নান্দনিক এই শহর ছেড়ে-
ফিরে যাই গহীন অরণ্যে একা,যদি তোমার সন্ধান পাই——
চিৎকার করে ডাকি নির্বাসিতা, নির্বাসিতা,
চারিদিকে আঁধারের এক জমকালো প্রলেপ,
গাছের শাখা-প্রশাখা পাতা ফুল ফল বাতাসে
দুলে দুলে জানায় আমায়-
ও নামে কেউ এখানে থাকে না এখন।

ফিরে যাই আমি সাগরের কাছে,
প্রশ্ন ছুঁড়ে দেই উত্তাল ঢেউয়ে,
জানতে চাই বারবার—
নির্বাসিতাকে কি তোমরা দেখেছো নাকি?
ক্ষণিক ভাবান্তরে-
শান্ত হয়ে যায় সাগরের সপ্রতিভ গানঃ
জানায় আমায়, এ নামে কেউ কখনো আসেনি সেখানে।

আমি আবারও চিৎকার করে ডাকি-
নির্বাসিতা,নির্বাসিতা, নির্বাসিতা বলে,
নির্জন রাত্রির আঁধার জানালার কাঁচগুলো ভেঙে ভেঙে চৌচির হয়,
রাত্রি জানায়- নেই নির্বাসিতা!
গ্রহ নক্ষত্র জানায়- নেই নির্বাসিতা!
অরণ্য জানায়- নেই নির্বাসিতা!
সাগর জানায়- নেই নির্বাসিতা!
শুধু বুকের পরাকাষ্ঠে মুমুক্ষু হৃদয় বলে ওঠে-
আছে, নির্বাসিতা আছে, আছে নির্বাসিতা।

🖋️ মোঃ হাবিবুল হক চয়ন
মিরপুর,ঢাকা/ ২৪.০৯.২০২২

About The Author

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *