কৌতুহল

Photo of author

By লীনা ফারজানা

২৫ আগস্ট সকাল ১০ টা। চোখে সমস্যার জন্য ডাক্তারের চেম্বারের সামনে রিসিপশনে সিরিয়াল করাতে যাই। রিসিপশনের ছেলেটিকে নাম, স্বামীর নাম বলার পরে বয়স ৪১ বলাতেই আমার দিকে তাকায়। কিছু সময় ভেবে বয়স লিখলো ৪১ বছর।

আমি চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছি কখন আমার ডাক পড়বে তারই জন্য। আমার পাশের চেয়ারে বসা গ্রামের একজন বয়স্ক ভদ্রলোক বললেন – তোমার বয়স ৪১ বছর? এটা কি করে হয়? আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। ছেলেটিও বললো আমিও বিশ্বাস করতে পারছিনা। আরো কিছু কথা। বললাম – আমি সত্যি বলেছি।

কিছুক্ষন পরে ভদ্রলোক ডাক্তারের কাছে চলে গেলেন। আমি বসে অপেক্ষা করছি। ভদ্রলোক চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলেন, চোখের ড্রপ নিলেন। তারপর আমার পাশের চেয়ারেই বসলেন। রিশিপশনের ছেলেটি দু ফোটা চোখে দিয়ে বসতে বললো। কয়েক মিনিট চোখ বন্ধ করে ছেলেটিকে বললেন- বাবা আমাকে আরেকবার ড্রপ দিয়ে দাও তো।

শুনে আমি হাসলাম আর বললাম- চাচা আপনি কি একবারেই সুস্থ্য হতে চান? ভদ্রলোক হেসে ফেললেন। ছেলেটি বললো নিয়ম মতো দিতে হয়, বললেই দেয়া যায় না।

ভদ্রলোক আমাকে জিগ্যেস করলেন আমার বাড়ি কোথায়, কোথায় থাকি, স্বামী কি করে আরো বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন। আমি বিরক্ত হয়ে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলাম। ডাক্তার চোখের পরীক্ষা করতে করতে ভদ্রলোকের মতো একই প্রশ্ন করলেন। যেহেতু ডাক্তার তাই উত্তর দিতেই হলো।

আমি বাইরে বের হয়ে রিসিপশনের ছেলেটিকে প্রেসক্রিপশন দিলাম। বললো- একটা ঔষধ এখানে নেই। বললাম- সমস্যা নেই, পরিচিত দোকান থেকে নিবো। ছেলেটি আগের দুজনের মতো একই প্রশ্ন করলো। আবারও বিরক্ত হয়ে উত্তর দিয়ে বললাম কাগজগুলো দিন চলে যাবো। ছেলেটি কাগজ গুলো একটি খামে ভরে খামের পেছনে কি যেনো লিখতে দেখলাম। বললো- এখানে আমার নাম ও ফোন নাম্বার আছে। সমস্যা হলে কল দিবেন। আমি কিছু না বলে বের হলাম।

আমি বুঝতে পারি না অন্যের বিষয়ে জানার এতো কৌতূহল কেনো। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো আর কি! কিছুদিন আগে আমার গল্প পড়ে একজন কমেন্ট করেছিলেন আমি নাকি অঘটন ঘটন পটিয়সী! সত্যিটা আমি ও মেনে নিয়েছি। কিন্তু এতে আমার কোনো হাত নেই!

লীনা ফারজানা
২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ইং