ক্রিয়াভিত্তিক – বর্ণভিত্তিক ভাষার গল্প
আজ একটা মজার ঘটনা ঘটল—
বইটা সকালে হাসব্যান্ডকে দেখিয়ে বললাম, এটা নতুন বই আমার। পড়।
সে বলল, তুমি পড়ে শোনাও, আমি এখন পড়ব না।
আমি নীচের লাইনগুলো পড়ে শোনালাম তাঁকে।
তন্ময়ের কাছে বিষয়টি কঠিন লাগছে। সে প্রশ্ন করে, তবে কি দাদু মানুষ শুরু থেকেই কলম ব্যবহার করে আসছে?
না দাদু, মানুষ যখন শিকার করত, কাঠি দিয়ে ছবি আঁকত মানুষ। পাতা বা গাছের ডালের কষ দিয়ে গুহার গায়ে পশু বা তার মনের ভাবটি ছবি এঁকে রাখত যাতে অন্যের কাছে তার ভাবনাটি পৌঁছে যায়। কারণ তখন তো মানুষ লিখতে জানত না।
কলমের ইতিহাস প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন মিশরীয়রা বিভিন্ন গাছের পাতা ও বাকলের উপর নলখাগড়া শর বা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে লিখত। মধ্যযুগে কাগজ আবিষ্কারের পর পালকের কলমের শুরু। ৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে খলিফা আলমুইজ এর আদেশ অনুসারে হাতে কালি লাগবে না অথচ লেখার সময় আপনা থেকে কলমের ডগায় কালি চলে আসবে এমন কলম আবিষ্কার করা হয়। সেই কলমের নাম ছিল ফাউন্টেন পেন। গ্রীসে ছিল হাতির দাঁতের কলম। এর নাম ছিল স্টাইলাস। লেখার ধরণকে সেজন্য স্টাইল বলা হয়।
দাদু, নলখাগড়া দিয়ে কীভাবে কলম হয়?
নলখাগড়ার নলের আগাকে চোখা তেরছা করে কেটে কলম বানানো হত। গাছের চারা করা হয় একটা অংশ কেটে আরেক গাছে জোড়া দিয়ে নতুন চারা তৈরীর পদ্ধতিকেও কলম বলে। নলখাগড়ার আগে পাখির পালকের গোড়ার চোখার অংশ দিয়ে লেখা হত এর পর এল বাঁশের কঞ্চি কলম।
উনি অবাক করে দিয়ে আমাকে বললেন, এই এত এত লেখা কখন লেখো তুমি?
আমার হাসি পেলো, বললাম, সবাই এই কথা বলে যে কখন লিখি আমি!
এমন নয় যে পড়া বা লেখার জন্য আমি আমার কোন কর্তব্যে কখনও অবহেলা করেছি। এই কথাটিই তাঁর কাছে জানতে চাইলাম—
বল আমি কোন কর্তব্যে অবহেলা করেছি বা এড়িয়ে গেছি কোন অজুহাতে?
সে ধীরে ধীরে মাথা নেড়ে না করল। তারপর একটা কথাই বলল যা শুনে আমার ভাল লাগল বাট কাউকে বলতে পারছি না।