স্বামী… ডিকশনারিতে এই স্বামী শব্দের অর্থ –
পতি, প্রভু, মনিব, মালিক, অধিপতি, কিন্তু
কোথাও তো বন্ধু লেখা নেই।
তাহলে আমি কি বন্ধু হতে পারিনা?
আচ্ছা অতীতের এই ধারণা কি বদলানো যায় না?
আমরা কি নতুন নিয়ম বানাতে পারি না?
যে নিয়মে স্বামী শব্দের প্রথম মানে লেখা থাকবে “পরম বন্ধু / প্রাণের সখা”।
আচ্ছা তুমি কি চাইবে আমার বন্ধু হতে?
চাইবে? যেভাবে প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে
নিজের সারাদিনের পরিশ্রম কে একটু স্বস্তি দিতে
মাটির ভাঁড়ে এক কাপ চা হাতে নিয়ে
পাড়ার কোনো দোকানের শেডের নিচে বসে,
নানান গল্পে নানান আলোচনায় মত্ত হয়ে ঠিক যেমন
তুমিও ডুবে যাও তোমার প্রিয় বন্ধুদের সাথে,
আমিও কি, আমিও কি থাকতে পারি সেই মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে
তোমার পাশে?
তোমার কাঁধে হাত রেখে গরম চায়ের ভাঁড় হাতে নিয়ে
একটু বসতে পারি?
হাসতে পারি তোমাদের সাথে প্রাণখুলে রোদেলা দুপুরের
একগুচ্ছ সূর্যমুখী হয়ে?
তুমি কি চোখ রাঙাবে আমায়?
তোমার লাল লাল চোখের রাগান্বিত ইশারায় বুঝিয়ে দেবে আমায় –
ঘরে যাও।
আচ্ছা, শুনেছি বন্ধুদের জলসায় নাকি তোমরা তোমাদের
আনন্দ, দুঃখ সবই ভাগ করে নাও একে অপরের সাথে।
জানো আমারও দুঃখ হয়!
কিন্তু তোমার আমার প্রতি রাতের ঘরোয়া জলসায় কেবল সুখ ভাগ হয়।
দুঃখ পড়ে থাকে ক্লান্ত বিছানায় অগোছালো চাদরের ভাঁজে ভাঁজে।
বলো না বন্ধু হবে আমার?
কত দিন যায়
কত গল্প অতীত হয়
কত কত বন্ধুত্ব পুরনো হয়ে যায়
কিন্তু তোমাদের সেই বন্ধুত্বের টান একবিন্দু কমে না।
কেবল কমে যায় তো কমেই যায়, তোমার আমার এই
কাছাকাছি, পাশাপাশি চলার গল্পগুলো।
ছোট্ট একটা বিছানা কখন যেন ভাগ হয়ে যায় দুই মেরু প্রদেশে।
কেন এমনটা হয়?
কেন আমরাও বন্ধু হতে পারি না?
যে তোমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় সারাদিন পথ চেয়ে বসে থাকে,
তেলের ছিটায় জ্বলে পুড়ে যাওয়া যে হাত দুটো তোমার
পছন্দের রান্না সাজিয়ে দেয় টেবিলে,
জ্বরে তোমার গা পুড়ে যাচ্ছে দেখে যে
সারারাত তোমার কপালে জলপট্টি দিতে থাকে
আর জ্বর কমার অপেক্ষায় তোমার পাশে সারা রাত জেগে বসে থাকে
যে তোমার আনন্দে হাসে
যে তোমার দুঃখে কাঁদে
তোমার ব্যথায় যে ব্যথা পায়
তোমার সুখে যে সুখী হয়
আচ্ছা এখনো কি তোমাদের ডিকশনারি বলবে
“সে তোমার বন্ধু নয়”
রমেশ দাস