বন্ধু শুভঙ্কর,
গত তারিখে তোমার কিছু কথার স্মৃতিচারণ করেছি লিখে পাঠিয়েছি বেশ ক’দিন হলো।মনে হয় এতোদিনে পেয়ে গিয়েছো চিঠি আমার। যদিও ঠিকানা বিহীন, ডিজিটাল যুগে ঠিকানা লিখতে নেই, পৌঁছে যাবে সময়ে কোনো একসময়ে।
প্রিয় বন্ধু আমার, এখন সময়গুলো বড্ড এলোমেলো বেসামাল গো,প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ মনে মনে লিখে যাই কত্তো শতো কষ্ট কথা মনে মনে।
পাঠিয়ে দিই তোমাকে গোপনে গোপনে আর স্বস্তির শ্বাস নিতে থাকি।কেনো এমন হলো বলো তো? হ্যাঁ, তুমি ছিলে একটু চাপা গোছের মুখ খুলে কিছু বলতে চাইতেনা,কিন্তু সারা সময় আমাকে আগলে রাখতে দৃষ্টিতে। বাদ দিই অতসব কথা গো, আজ আমার জন্য একটি বিশেষ দিন। চমৎকার বসন্তের পলাশের মতো গভীর ভালোবাসার। তুমি তো জানো শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার সাথে পলাশের মেলেনা।তবুও চমৎকার যজ্ঞের, চমৎকার ভালোবাসার রঙ এরা।
স্বাধীনতা দিবস,বিজয় দিবস,একুশ,বসন্ত দিবসে বেশি করেই এদের নাম, ভালোবাসার মহত্ব,মমত্ববোধে আনা হয়, কারণ জানিনা তবে বোধহয় ঐতিহাসিক বাস্তবতায় চমৎকার কোন মূল্যায়ন আছে।
তোমার কাছ থেকে জানতে চেয়েছি অনেক বার পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙটির গুরুত্বের কথা। তুমি অনেক যুক্তি তর্ক রেখে বুঝাতে চেয়েছো আর আমি বুঝতে গিয়ে শুধু তোমার দিকেই অপলক তাকিয়ে থেকেছি। জানিনা কেনো?
কথা শেষ করে কি অদ্ভুত সুরে বলতে তুমি, বুঝেছো তো? আমি পাল্টা প্রশ্ন করে জিজ্ঞেস করতাম,
“যাকে আরাধ্য করে প্রতিটি মুহূর্তের শুরু
কি আছে তাহার মাঝে?
কি আছে তাহার গভীর দু’টো চোখে,
কি আছে তাহার উষ্ণতার ঠোঁটে
কি আছে তাহার অমন মোহন হাসিতে
কি আছে তাহার শ্বাসে-প্রশ্বাসে
কি আছে তাহার অনুভবে,যার অনুভবের স্পর্শ
সারা সময় তোলপাড় করে রাখে,দারুণ অহংকারী হতে শেখায় ভালোবাসায়?শরীরের সুবাস নিতে শেখায় অতি যতনে,মুগ্ধতায়। অনেক অনেক জিজ্ঞাসা, এমন কতো প্রশ্ন?
তুমি অবাক হয়ে বলতে এতোসব কথা তো পরম মমতার প্রিয় মানুষের জন্য। প্রচন্ড বোধের, প্রচন্ড আকুলতার,নরোম রোদ্দুরের মতো ভালোবাসার গো,তুমি কি কাউকে ভালোবাসো? মনে মনে, প্রকাশ্যে।
আমি উত্তর না রেখেই আবার জিজ্ঞেস করি, বলো
এগুলো কী চাওয়া,কোনো আবেদন অথবা কোনো প্রাপ্তির প্রকাশ?
তুমি শুধু বড্ড একটা শ্বাস ছেড়ে বলেছিলে জানিনা আমি কিছু জানিনা,অনিমেষ চেয়ে থেকেছিলে মেঘে ভরা আকাশে,
হঠাৎই বৃষ্টির লুটোপুটি, তুমি বৃষ্টিতে ভিজে সারারাত জ্বর মাথায় কষ্টে বিলাপ করেছো হ্যাঁ, হ্যাঁ হ্যাঁ চারুলতা আমি
আমি তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসি, ভালোবাসি আমার জীবনের চেয়েও বেশি।
চারুলতা খল খল হেসে ওঠে,চোখ ভরা জলে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
শুভঙ্কর বন্ধু আমার, সময় গড়িয়ে যায় স্মৃতির পাখি ডানা ঝাপটায়,আমার কষ্ট কথারা দাপিয়ে ঝর তোলে। আজকাল কষ্টরা বড্ড এলোমেলো হয়, নষ্ট হয় আমার বুকের গৃহস্থালি, ভালোবাসা জেগে থাকে বিষন্ন বিলাসে।
চারুলতা নামটি তোমার দেয়া, তুমি তোমার যখন ইচ্ছে ডাকার সে নামেই ডাকতে। আমার মন্দ লাগতো না শুনতে। আমি ও তোমাকে ডেকে দিতাম নানান নামে তুমি চমৎকার করে হেসে দিতে নতুন নামের ডাক শুনে।
শুভঙ্কর বন্ধু আমার,
কথারা অনেক বেশি ভারি হয়ে গেছে গো, আমি আজ ভীষণ ক্লান্ত, ভীষণ খুশি, ভীষণ খুশি পরের চিঠির আলাপে বলবো সব কথা। আজ ফিরছি বন্ধু। সময়ে চিঠির উত্তর লিখে দিয়ো প্লিজ। অপেক্ষায় থাকবো। শুধু জেনে রেখো শুভঙ্কর বন্ধু আমার, ভালোবাসি,ভালোবাসি,শুভঙ্কর বন্ধু ভালোবাসি শুধু তোমাকে
তোমার চারুলতা।
০২.০৩.২০২২খ্রি
চলবে…