ধরো তোমার সাথে আবার দ্যাখা
এক কোটি বছর পর।
গ্রীণ-জোনে বসে আছো। উদ্ভ্রান্ত চোখে তাকিয়ে আছো।
আমি তখন সড়কের মোড়ে মোড়ে চা-কফি বিক্রি করি। তোমার পাশে অন্য যুবক।
তোমার বন্ধু অথবা তোমার ভাই অথবা প্রিয়তম প্রিয়জন।
চোখের ওপর চোখ পড়তেই-
তুমি বলে উঠলে-
দু কাপ চা দিয়েন ভাই।
আমার এক হাতে চায়ের ফ্লাস্ক আর অন্যহাতে কোটি বছর ধরে সংরক্ষিত হাতের পরশ।
বুকের বিষুব রেখায়, হৃদয়ের মান মন্দিরে, আর ঠোঁট ঘড়িতে সেই পুরোনো লকেট
এখনো চলমান, জীবিত।
এই লন চা। আমি তাকিয়ে আছি।
তোমার চিবুক গড়িয়ে পড়ছে ঘাম।
ভীষণ রোদে তুমি ঘর্মাক্ত।
আমায় এভাবে তাকাতে দেখে তোমার পাশের লোকটি বলে উঠলো-
এই বেয়াদ্দপ!
এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?
তুমি তাকে থামিয়ে বললে-
ধুর!ছাড়ো তো।
আমার হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো একশ টাকার একটি পুরোনো নোট।
নোটের ওপর লেখা
সুমাইয়া জাফরকে ভালোবাসে।
আমি আশি টাকা ফেরত দিয়ে বললাম,
এই লন মিঁয়া ভাই।
আবারো তাকিয়ে পলক ফেলতেই
চলে গেলাম।
রেখে গেলাম শুষ্ক পথের ওপর বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধতা।
তুমি কি যেন ভাবছো!
আমায় দেখতে ভিখিরির মতো লাগছিলো।
ছেঁড়া গেঞ্জি। পরনে বেশ পুরাতন নোংরা লুঙ্গি।
হঠাৎ তোমার মনে পড়লো-
আমার বুকে
ঝোলানো
একটি ইংরেজী
অক্ষর
আর (R)
তুমি বলে উঠলে-
এ তো আমি লালনকে দিয়েছিলাম!
আমি নিঁখোজ হয়ে ছিলাম।
তবে কেন?কবে?
তোমার কারণে!কিংবা আমার কারণে!
আজ আর মনে নেই।
কিছুদূর যেতে আমার মনে পড়লো-
তোমার হাতে ছিলো শাখা,কপালে ছিলো সিঁদুর।
হ্যাঁ। হ্যাঁ
ঠিক তাই।
উনি তোমার স্বামী।
আমার বুকের ভেতর তেত্রিশ কোটি দেবতা
কাঁদছে।
ক্রমশঃ ভেঙে পড়ছে
ইমারত।
পথে পথে কাঁচের গুড়ো।
পা কেঁটে যাচ্ছে সমস্ত পথিকের
যাদের গন্তব্য
এক মাত্র প্রেমই ছিলো।
সিরিয়ায় কোটিবছর আগের সেই নৃশংসতা এখন কয়েক কোটিগুণ৷
কবির সুমন মারা গিয়েছিলেন।
সালমা খাতুন আত্মহত্যা করেছিলেন।
এরপর আরো কয়েককোটি বছর পর এখনো বেঁচে আছি।
আমার সপ্তাহে কেবল একটিদিনই
ঘুরে ঘুরে আসে।
শুক্রবার, শুক্রবার, শুক্রবার…