কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র দর্শন (পর্ব-৪)

Photo of author

By Fatema Hossain

বেলা যখন প্রায় আড়াইটা তিনটা তখন আমরা আমাদের নয়টি পরিবারের জন্য নির্ধারিত কটেজ এ গিয়ে পৌছালাম। এখানে ঘটলো তিন নাম্বার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা টি।

আমাদের জন্য যে আট টা কটেজ বুকিং দেয়া ছিলো (কটেজ বুকিং হবার পর আমরা যেহেতু যাবার জন্য রাজি হয়েছিলাম সেহেতু আমাদের জন্য আলাদা কটেজ বুক করা সম্ভব হয়নি বিধায় ফেরদৌস ভাই সুমি ভাবি উনাদের সাথে আমাদের রুম কটেজ শেয়ার করলেন)কিন্তু ওখানে আমাদের পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় এবং ২৬ মার্চের ছুটির কারণে অতিথির অনেক চাপ ছিলো। তাই তারা উচ্চ ভাড়ায় অন্যদের চারটি কটেজ দিয়ে দিয়েছে। আমাদের নয়টি পরিবারের জন্য মাত্র পাঁচটা কটেজ দিলে সাথে থাকা ভাইয়াদের সাথে কটেজ কতৃপক্ষের একপ্রকার ঝুটঝামেলা হয়ে গেল।

এদিকে বাচ্চাদের খুধা লেগে গেছে বিকেল হয়ে আসছে বিচেও যেতে হবে তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যেকটা দিচ্ছে, ওকটার ভিতর আগে লাগেজ পত্র রেখে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।সে মতে লাগেজ রেখে আমরা সবাই নিচে নেমে আসলাম। পাশেই খাবার হোটেল সেখানে গিয়ে খাবার অর্ডার দিয়ে বসে গেলাম খেতে। নানা রকম ভর্তা আর সামুদ্রিক মাছের তরকারি দিয়ে খিদে পেটে খুব জমিয়ে খাওয়া হলো।

খাওয়ার পর আমরা আর উপরে গেলাম না। সেখান থেকেই বিচে চলে গেলাম। শুধু আমার হাসবেন্ড রুমে গিয়ে রেস্ট নিতে চাইলে আমাদের তাকে রেখেই চলে যেতে হলো। বিচে আমরা ও বাচ্চারা অনেক আনন্দ করলাম ছবি তুল্লাম। লাকি ভাবি জীবন ভাইয়ের বড়ো ছেলে আইমান (চুয়েটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট) ছবি তুলছিল। সামুদ্রিক ঢেউয়ের দোলায় ওর প্যান্টের পকেটে থাকা নতুন মোবাইল পানি বালি ঢুকে ভিজে গেলে বাবাটার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সাথে আমাদের ও।ভাগ্যিস ডিজিটাল ক্যামেরা টার কোনো ক্ষতি হয়নি! শেষমেশ সূর্য ডোবার পরে সবাই মিলে দল বেঁধে ফিরে এলাম।

বিচ থেকে ফিরে সবাই গোসল সেরে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। একে একে সব ভাবিরা আমার রুমে চলে এলে আমরা ওখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।বাচ্চারা তাদের রুমে।ভাইয়ারা এক টাতে। এরপর ডাক পড়লো নিচে চা নাস্তা খেতে গেলাম। ওখান থেকেই সোজা গাড়িতে করে হাণ্ডি তে গেলাম রাতের খাবার খেতে। ওখানে যাবার পর মানুষের ঢল দেখে তো আমাদের আক্কেল গুড়ুম! একটা টেবিল ও খালি নেই। বাইরেও বিশাল লম্বা লাইন।ভাইয়ারা চেষ্টা করতে থাকলেন,আর আমরা সামনের দোকানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। কেউকেউ কেনাকাটা করলেন।রাত এগারোটা সাড়ে এগারোটা য় আমরা টেবিল খালি পেলাম।তবে খাবার অপ্রতুল! বাচ্চাদের কাচ্চিবিরিয়ানি দিয়ে আমরা পরোটা মাংস সালাদ ডাল যে যা পেলাম ভাগাভাগি করে খেয়ে রাত্রি প্রায় একটার দিকে কটেজে ফিরলাম। দুইজন ভাই সকালের বাসের বন্দোবস্ত করে রাত্রি দুইটায় ফিরলেন।ভোর ছটায় হোটেলের নিচ থেকে রিজার্ভ বাস টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছাড়বে।একটু ও দেরি করা যাবেনা। তাহলে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন এর জাহাজ মিস হয়ে যাবে। আমরা সতর্কবাণী শুনে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম।

চলবে…

ফাতেমা হোসেন
১২/৩/২০২২