কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন সমুদ্র দর্শন (পর্ব-১)

Photo of author

By Fatema Hossain

সময় টা ছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাস।আমার ছোটো ছেলের এস এস সি পরীক্ষা শেষ। আমি ওকে নিয়ে মাকে দেখতে মেহেরপুর যাবার জন্য রেডি হচ্ছি।

আর ওর বন্ধুর পরিবার গুলো সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল একসাথে কোথাও ঘুরতে যাবার। বাচ্চা ও আমাদের ১২ বছরের পথচলা স্মৃতি টাকে ধরে রাখতে এই প্রয়াস!

কেননা এরপর কলেজে উঠে কে কোথায় ভর্তি হবে তাতে সেই নার্সারি থেকে একসাথে বারোবছরের জার্নিটা হয়তো এখানেই শেষ হয়ে যাবে।

যেই কথা সেই কাজ।ভাইয়ারা প্রতি সন্ধ্যায় বড়ো পোল অথবা আর্টিলারিতে একসাথে হন আর মিটিং করেন।

ভাবিরাও কম জান না। তাঁরাও উঠে পড়ে লাগলেন প্ল্যান সফল করতে। আমাদের সাতটি পরিবারের মধ্যে আমি ও আমার হাসবেন্ড ছিলাম বয়োজ্যেষ্ঠ।

সেই হিসাবে অন্যেরা যথেষ্ট সন্মান করেন।আমরাও তাদের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছি।

তো,মিটিং এর পর মিটিং শেষে সিদ্ধান্ত হল ২৪/৩/২০১৭ সবাই ভোরের বাসে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে ঐরাত টা সেখানে থেকে পরের ভোরে সেন্টমার্টিন যাবে ওখানে অন্তত একরাত থাকবে।

এরপর সবাই মিলে আমাকে কনভিন্স করে ফেল্লো। আমি না গেলে তাদের খুব খারাপ লাগবে। সেটা আমার ও লাগছিল। কিন্তু মা কে দেখতে যাবার টান টাও ছিল।কিন্তু ভালোবাসার মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে না করতে পারলাম না। মেহেরপুরের টিকেট ক্যানসেল করে দিলাম।

তবে একটা সমস্যা ছিল, আমার হাসবেন্ড কে নিয়ে। উনি যাবেন না। প্রথমে সিদ্ধান্ত হল আমি আর ছোটু যাব।তাতে অন্যান্য ভাই-ভাবিরা ভাবলেন তারা সবাই পরিবার সহ যাবেন সেখানে আমার নিশ্চয় খারাপ লাগবে। তাছাড়া আমাদের দুজনের যদি কোনো বিপদ আসে তখন আমাদের দায়িত্ব কে নিবে। এই ভেবে একেক দিন একেক ভাই, বিশেষ করে মঞ্জু ভাই, ফেরদৌস ভাই আর জীবন ভাই ফোন করে করে শেষ পর্যন্ত আমার হাসবেন্ড কে রাজি করিয়েই ফেললেন!

আমরা সিলভার বেলস কিন্ডারগার্টেন থেকে কলিজিয়েট স্কুল পর্যন্ত এক সাথে পড়া ছয়জন ছেলে বাচ্চার পরিবার ও আরেক জন মুসলিম হাই স্কুলের বাচ্চার পরিবার মোট সাতটি পরিবারের সাথ মঞ্জু ভাই এর দুই বন্ধু পরিবার এক সাথে যাচ্ছি।

এরমধ্যেই আমরা সবার জন্য একই রকম জামা খুব দ্রুততার সাথে বানিয়ে ফেললাম। আর ভায়েরা এক রকম টিশার্ট কিনে ফেললেন।সিদ্ধান্ত হলো এগুলো সেন্টমার্টিন যাবার দিন একসাথে পরা হবে।

ভায়েরা একেকজন একেক টা কাজ ভাগ করে নিলেন। কেউ কটেজ ঠিক করা, কেই বাসের টিকেট কাটা কেউ খাবার ব্যাপার টা দেখা।তবে সার্বিক দায়িত্ব নিলেন করিৎকর্মা জীবন ভাই। সাদমানের আব্বা আমাদের লাকি ভাবির হাসবেন্ড।

চলবে…

ফাতেমা হোসেন
৭ই মার্চ, ২০২২ইং