আমি নিমজ্জিত হচ্ছিএকটু একটু করে
সৈকতের বালিয়াড়িতে লুকানো চোরাবালিতে!
সমুখে সমুদ্রের ফেনিল জলরাশি
বার বার আছড়ে পড়ছে সৈকতের তীরঘেঁষে।
ভোরের সূর্যোদয় দেখবো বলে তোমায় আমি
গভীর ঘুম থেকে টেনে তুলে এনেছিলাম প্রিয়া!
সেই তুমি আহ্লাদী বউ আমার, দু’হাতে ভরা মেহেদি
নিয়ে আকুলি বিকুলি করে চিৎকার করেই চলেছ আমাকে বাঁচাতে সাহায্যে র আশায়!
আর আমি অসহায় হয়ে তোমার দিকে অপলক
চেয়ে আছি, আর ভাবছি দু’দিন এর বউটা আমার,
হয়তো একটু পরেই বিধবা হয়ে যাবে!
কতোটা অপমান আর অসহ্য গঞ্জনা সইতে হবে প্রিয়া
শুধুই আমার জন্য আগামীর দিনগুলোতে তোমাকে!
কিন্তু তোমার তো কোনোই দোষ ছিলো না,
আমিই অতভোরে জোর করে পাঁজাকোলা
করে তুলে এনেছিলাম ঘুমন্ত অবস্থায় তোমাকে!
কিন্তু আমি মরে গেলে কে স্বাক্ষী দেবে তোমার হয়ে?
তুমি দৌড়ে যাচ্ছ সাহায্যের খোঁজে আবার ফিরে আসছ আমার অবস্থা দেখতে আমারই কাছে!
মেহেদিপরা হাত আর খোলা চুল নিয়ে
দৌড়ে ফিরছ আমাকে বাঁচানোর কি ভীষণ আকুলতা তোমার!
কষ্ট গুলো চোখ থেকে ঝরে পড়ছে গালদুটো বেয়ে!
যেন সাফা মারওয়ার কাহিনি পুনরাবৃত্তি
হচ্ছে আমার সামনে!
আমি আর সহ্য করতে পারছি না , স্থির থাকার
অবিরত চেষ্টা করে যাচ্ছি আর ভাবছি
আমার মা এর কি হবে?
বাবা চলে যাবার পর কতটা ক্লেশ সহ্য করে
আমাদের বড়ো করে তুলেছেন।
উপার্জনক্ষম প্রথম সন্তান তার চলে যাচ্ছে
তিনি এই শোক কিভাবে সহ্য করবেন!
কি ভুল আমি করলাম,নিয়তি আমাদের সাথে
কেন এমন করলো প্রিয়া!
আমি কি সত্যিই এতোটুকু হায়াত নিয়েই জন্মেছিলাম!
কেউ কি আসবে না আমার বাঁচানোর ফেরেস্তা হয়ে?
প্রিয়া তুমি আর কেঁদোনা, আমার পদ যুগল ক্রমশই
নিচের দিকে তলিয়ে যাচ্ছে,দম বন্ধ হয়ে আসছে
ক্রমশ চোখের পাতা ভারি হয়ে আসছে!
আমি আর তোমাকে ও দেখতে পাচ্ছি না!
যেন সূর্যাস্তের সময় ঘণিয়ে এসেছে আবছা হয়ে
যাচ্ছে চারিদিক,
আধারে নিমজ্জিত হচ্ছে জলরাশীতে দীপ্তমান সূর্য!
আমায় ক্ষমা করো প্রিয়া তোমার জীবনটা শুরু করার আগেই শেষ করে দেবার জন্য!
ক্ষমা করে দিও গো মা,তোমার ভরসা হতে তোমার সাথে আর থাকা হলো না!
ফাতেমা হোসেন
২৬/২/২০২২