২০১০ এ আমার স্বামীর ক্যান্সার ধরা পরার পর থেকে জানার চেষ্টা করেছি এই ব্যাধিটি কেন হয় ?
ক্যান্সার হচ্ছে মানবদেহের কোষের পরিবর্তিত রূপ, এক ধরনের জেনেটিক মিউটেশন। প্রতিটি মানুষের শরীরেই নাকি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৬% । শুনেছি প্রাত্তাহিক জীবন যাপন প্রণালী এই রোগের সম্ভাবনা কে নিয়ন্ত্রণ করে।
গত ১১ বছর যাবত চেষ্টা করেছি এই রোগ থেকে দূরে থাকার। বাসায় রেডমিট আনা বন্ধ করা সহ চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের। খাদ্যাভ্যাসে কত কিছু বাদ দিয়েছি আবার অনেক কিছু নতুন করে সংযোগও করেছি।
কিন্তু কোন ফাঁকে শরীরের অলিন্দ গলে ঢুকে গেলো ঠিকই । আমার স্বামী সবসময় কানে লাগিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলত বিধায় ধারনা হল মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কারণ হতে পারে। আমাদের বাসার সবাই স্পিকার অন করে কথা বলি।
কিন্তু এবার ক্যানাডা থেকে ফেরার পর রাতের বেলা শুয়ে শুয়ে ইউটিউব দেখতাম কয়েক ঘণ্টা। তবে কি আমার ক্যান্সারটাও মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন থেকেই ?
বুকের উপড়েই হাতে ধরা থাকতো তো !
জানি না ঠিক।
মনের ভেতর কত শত প্রশ্ন যে উঁকি দিয়ে যায় তাঁর কি কোন ঠিক আছে নাকি সঠিক ব্যাখ্যা আছে ?
যতবার আয়নায় চোখ পরছে চুলহীন নিজেকে অচেনা লাগছে তবে মন খারাপ হচ্ছে না এক ফোঁটাও । পৃথিবীতে আমাদের সময়কাল নির্ধারিত। ভেবে লাভ নেই।
জীবনের প্রতিটি বাঁকে উপলব্ধি করেছি আমি বিধাতার ইচ্ছার কাছে জিম্মি। জীবনে অনেক কিছু চেয়েছি যা পাইনি, আবার এতো বেশী কিছু পেয়েছি যার কল্পনাও আমি হয়ত করিনি কোনদিন।
একদিন চার দেওয়ালের মাঝে কত অনাদর,অবহেলা,উপেক্ষা সয়েছি। আবার বাইরের জগতে মানুষের শ্রদ্ধা-সম্মান, ভালবাসাও তো কম পাইনি ।
সৃষ্টিকর্তা কোন না কোন ভাবে মানুষের সঠিক প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দেন ।
এক জীবনে কত শত বর্ণের অভিজ্ঞতার সমাহার।
মাঝে মাঝে আনমনেই ভাবি মায়া-মমতা ঘেরা পরিবারের প্রচণ্ড আদুরে কন্যার জীবন কি এতোটাই কঠিন হওয়ার কথা ছিল ?
নাকি মাত্রাতিরিক্ত ভালোত্ব আর ভদ্রতাই তাঁর জীবনে কাল হল ???
চলবে..