আজিমপুর টু উত্তরা
মেঘে মেঘে অনেক বেলা।
আনোয়ার হাকিম।
আমি যখন অভ্যন্তরীণ এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌছলাম তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ইউস-বাংলা কাউন্টারে হন্তদন্ত হয়ে গিয়ে যেই বলেছি আমি এই ফ্লাইটের প্যাসেঞ্জার অমনি ওখানকার দুই তিন জন ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লো। একজন বললো, “স্যার, উই আর এংসাসলি ওয়্যটিং ফর ইউ”। আরেকজন বললো, “পারহেপস ইটস টু লেট”। আরেকজন ওয়াকি টকিতে কি যেন বলছে। আমার সাথে হ্যান্ড লাগেজ ছাড়া কিছু নেই। ওরা আমাকে পারলে পাঁজাকোলা করে প্যাসেঞ্জার’স গেইটের সামনে দাঁড়ানো কারে তুলে দিল। আমি সাতপ্যাচ ঘুরে অবশেষে গমনোদ্যত সেই ক্রাফটে গিয়ে উঠলাম। এয়ার হোস্টেসের মুখে শুষ্ক অভ্যর্থনা। বুঝলাম তারাও অসন্তুষ্ট। আমাকে সীট দেখিয়ে দিলেন। আমার সীট জানালার পাশে। মন পুলকিত হলো। দেখতে দেখতে চিটাগাং যাওয়া যাবে। উপর থেকে নীচের মাটির জনপদকে দেখার মজাই আলাদা। আর মেঘেদের ভীড়ে হারিয়ে যাওয়াও রোমাঞ্চকর। জানালার পাশের সীটে এক ভদ্রমহিলা বসে আছেন। তিনি ধরেই নিয়েছেন এই সীট ফাঁকা যাচ্ছে। আমার দিকে চোখ মেলে তাকালেন। ভদ্রমহিলা অসম্ভব সুন্দরী। ভদ্রতা করে সীট ছেড়ে দেওয়ার আয়োজন করলেন। আমিও মওকা পেয়ে সৌজন্যতার পরাকাষ্ঠা দেখালাম। তিনি বিগলিত হয়ে ‘থ্যাংক ইউ’ জানালেন। আমি সীট বেল্ট বেঁধে বসলাম। ক্রাফ্ট টারমাক বরাবর চলা শুরু করে দিয়েছে। টেক অফ করা পর্যন্ত আমি দোয়া দরুদ যত জানি তা-ই আওড়াতে থাকলাম। জীবন কা সাওয়াল, তাই। এত কিছুর মধ্যে মোবাইল সুইচড অফ করতে ভুলে গিয়েছি। এয়ার হোস্টেস মিহি গলায় সতর্ক করে গেলো। টেক অফ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্লেন উপরে স্ট্যাবল হলো। পেপার পড়ছি। ভদ্রমহিলা কানে হেডফোন দিয়ে চোখ বুঁজে কি যেন শুনছে। তাতে আমার কি? তবে আমার একটু অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। তার পারফিউমের তেজী গন্ধে আমার মাথা স্টাক হয়ে যাচ্ছে। শ্বাস নিতে কষ্টই হচ্ছে। বিমান আকাশে ভাসছে। ঢাকা-চিটাগাং ফ্লাইট টাইম পঞ্চাশ মিনিট। দেখতে দেখতে কেটে যায়। যাচ্ছি একটা সেমিনার এটেন্ড করতে। এনভায়রনমেন্ট এর উপর। দুইদিনের সেমিনার। আমি সরকারের মানে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। মূলত এটি একটি বিদেশি এনজিও কর্তৃক আয়োজিত দেশি-বিদেশি এনজিও ও সরকারি পার্টনার অর্গানাইজেশন নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য সেমিনার। আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে র্যাডিসন ব্লু হোটেলে। এর আগে ওটাতে থাকা হয়নি। তবে পাশের সার্কিট হাউজে থেকেছি অনেকবার। এই অবসরে ওদের দেওয়া ফাইল ফোল্ডার খুলে স্কেজিওল দেখছিলাম। “এক্সকিউজ মি” বলে পাশের সুন্দরী কিছুটা বিস্ময় নিয়ে বললেন, “আপনিও কি আমাদের সেমিনার এটেন্ড করতে যাচ্ছেন”? আমি বুঝেও না বুঝার ভান করে বললাম, “কোন সেমিনার, ম্যাডাম”? সুন্দরী ফাইল ফোল্ডারের দিকে তার দৃষ্টি ছুঁড়ে মারলো। আমি সহজ হয়ে বললাম, “আপনিও”?
— জ্বী। তার উত্তর।
— কোথায় আছেন আপনি? আমার কৌতুহল।
— এই তো আপনার পাশে ।
— না মানে, মিনিস্ট্রির কেউ?
— কেন মিনিস্ট্রি ছাড়া আর কেউ থাকতে পারেনা?
— স্যরি, আই ডোন্ট মিন লাইক দেট।
— আমি একটি বিদেশি এনজিওতে আছি। সুন্দরী সহজ হলো।
— সো নাইস টু মিট ইউ
— মি টু। আজই ব্যাক করবেন?
— উহু কাল লাস্ট ফ্লাইটে। আপনি?
— আমিও
— গুড। আমি জোশের ঠ্যালায় বলে ফেললাম।
— গুড কেন?
— বাহরে দেখা হলো, গন্তব্য এক, উদ্দেশ্য এক, ফেরত যাত্রাও এক। সবই তো এক।
— সব বলতে
— এই তো। এগুলোই। রেডিসনেই থাকবেন তো?
— হ্যা। আপনিও?
— জ্বী। এখন দেখলেন তো সব এক
— আর কি কি এক?
— আপাতত এটুকুই। রেস্ট ইজ ইয়েট টু নো।
কথা চালাচালি এটুকুই। সুন্দরী পানি খেলো। সেই খাওয়াতেও যেন আর্ট আছে। খাতির জমানোর জন্য বললাম, “দিস ইজ মাই কার্ড। মে আই হেভ ইওরস”? “সিওর, হোয়াই নট। ইটস মাই প্লেজার।”? তার উত্তর। ভিজিটিং কার্ডটা উল্টে পাল্টে দেখলাম। ডঃ তনু শবনম। সিনিয়র কনসালটেন্ট (কনজারভেশন)। চমৎকার নাম। একেবারে ষোল আনা বাঙ্গালী নাম। সুন্দরীও আমার কার্ডটা নেড়েচেড়ে দেখলো। মুচকি হেসে বললো, “এখন বুঝেছি কেন মিনিস্ট্রির লোক ভেবেছিলেন আমাকে”? “আমরা লীড মিনিস্ট্রি, তাই পার্টনার মিনিস্ট্রির অনেকেরই আসার কথা, তাই ওরকমই ভেবেছিলাম”। আমার সরল স্বীকারোক্তি। “হয়ত আছে। আপনি তো আরেকটু হলে ফ্লাইটই মিস করছিলেন”। সুন্দরীর কথায় খানিকটা লজ্জাই পেলাম। সুন্দরী এবার আলাপ জমানোর ভঙ্গীতে বললো, “থাকেন কোথায়”? “উত্তরা” আমার জবাব শুনে অবাক হয়ে পরক্ষণেই মৃদু হেসে বললো, “কথায় বলেনা, মক্কার মানুষ হজ্জ্ব পায়না”। আমি কোন এক্সকিউজ দিলাম না। বললাম, “হুম্ম। ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমই”। এরিমধ্যে পাইলটের ঘোষণা এলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা চিটাগাং হযরত শাহ আমানত বিমানবন্দরে নামতে যাচ্ছি। গ্রাউন্ড টেম্পারেচার গুড। ওয়েদার সানি। আমাদের সেমিনার রেজিস্ট্রেশন সাড়ে দশটায়। ইনাগোরেশন এগারোটায়। এখন প্রায় সাড়ে আটটা। পতেঙ্গা থেকে রেডিসন অনেক দূর। তবে এরমধ্যেই পৌছানো সম্ভব। মন্ত্রী মহোদয় উদ্বোধন করবেন। বিমানবন্দরে আমাদের অধিদপ্তরের লোকজন ফুলের তোড়া হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সৌজন্যতা করে বললাম, “গাড়ী আছে। আমার সাথে যেতে পারবেন”। “নো থ্যাংক্স। আই হেভ ট্রান্সপোর্ট রাইট ওভার দেয়ার”। শবনমের উত্তর। আমি অভ্যর্থিত হয়ে ভি আই পি লাউঞ্জের দিকে অগ্রসর হলাম। একবার মনে হলো, সৌজন্যতা করে হলেও বলি তাকে লাউঞ্জ দিয়ে বেরোতে। কিন্তু একেক জনের পার্সোনালিটি একেক রকম হয়। হয়ত অন্যভাবে নেবে। তাই চুপ থাকলাম। তবে উত্তেজনা মনের মধ্যে কিলবিল করছে। অন্তত সে তো দেখে গেছে, বুঝেও গেছে যে, আমি ভি আই পি। আমার জন্য এয়ারপোর্টে লোকজন ফুলের তোড়া নিয়ে অপেক্ষা করে। আর আমার যাতায়াত পথ ভি আইপি লাউঞ্জ দিয়ে।
যথারীতি রেজিষ্ট্রেশন ইত্যাদি সেরে নির্ধারিত আসনে বসেছি। শবনমের সাথে দেখা। সেই হাসি। সেই হাই, হ্যালো। সোনালী চুল দুলিয়ে কাছে এসে বললো, “স্ন্যাক্স নিয়েছেন? ওইদিকে কর্ণারের টেবিলে আছে”। “মন্দ বলেন নি। চলেন কফি খাই”। স্ন্যাক্স খেতে খেতে আলাপ। পরিচিত অনেকের সাথে দেখা। ঢাকায় থাকলেও অনেকের সাথে দেখা হয়না অনেকদিন। পার্টিসিপেন্টদের বেশিরভাগই মহিলা। আজকাল মহিলাদের সরব উপস্থিতি সর্বত্র। একদিন একথা সহকর্মী লুবনাকে বলেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গ বারুদ জ্বলার মত জ্বলে উঠে, “জ্বলে নাকি”? আমি হাসতে হাসতে বললাম, “জ্বলে তো। খুব জ্বলে। হৃদয়ে ক্ষরণ হয়”। এই উত্তরে লুবনা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো, “সে কি রকম? অনেকের জ্বলে। মেয়েদের এগিয়ে আসা মেনে নিতে পারেনা। তাদের জ্বলতেই পারে। কিন্তু হৃদয়ে ক্ষরণ হয় কেন”? ভাবছি কি উত্তর দেওয়া যায়? সিরিয়াস হলে জেন্ডার এলার্জির তকমা গায়ে লেগে যেতে পারে। তাই কথার মোড় ঘুড়িয়ে দিয়ে বললাম, “ম্যাডাম, সর্বত্র এত এত ডানা কাটা পরী দেখলে চোখ ঝলসে যায়, মন পোড়ে, আর কোনটা রেখে কোনটা ধরির দ্যোতনায় পরে যাই”। লুবনা সিরিয়াস হতে গিয়েও হেসে উঠলো, বললো, “বেশির ভাগ পুরুষের চোখ খারাপ। মন কুশ্রী। আর মানসিকতা অতি নিম্ন মানের”। কথা দোষের না। ঠিকই আছে। তবে পুরুষ জাত নিয়ে কথা বলায় লাগলো। বললাম, “ম্যাডাম, এত সেজে গুজে চোখের সামনে ডানা কাটা পরী হয়ে ঘুরলে পুরুষের চোখের ওয়াইপার কতক্ষণ বন্ধ রাখা যায় বলুন তো। আর চোখের সাথে মনের ইন্দ্রিয়গত ইনবিল্ট বন্ডেজ আছে। এতে পুরুষেরই ক্ষতি। গুনাহর পাহাড় সুউচ্চ হয়”। লুবনা খুব মন দিয়ে নিরীক্ষণ করলো। বললো, “কি যে আমার সুফী পুরুষ এক একজন? দেখা আছে। আপনি কথা বলেন কাটাকাটা। তবে মধুর প্রলেপ দিয়ে। যে কেউ ইনক্লাইন্ড হতে বাধ্য”। এভাবেই লুবনার সাথে ঘনিষ্ঠতা। এক সাথে চাকরি। সেমিনার চেয়ারে বসে এসব কিসব আজেবাজে ভাবছি। উদ্বোধনী পর্বের বক্তৃতা চলছে। মন্ত্রী মহোদয় প্রধান অতিথি। সেমিনারের সাবজেক্ট এনভায়রনমেন্ট হলেও মন্ত্রীর তোষামোদিতে সবাই যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি এনজিওরাও কম যায় না। বাণিজ্যে লক্ষীর বসতি। সবই গিভ এন্ড টেক এর খেলা।
প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষ। সন্ধ্যায় পতেঙ্গায় বিমান বন্দরের কাছে বোট ক্লাবে স্ন্যাক্স ও ডিনার। সাথে সান্ধ্য ও রাত্রিকালীন সৈকত ভিউ ফ্রি। সবাই দল বেধে গেলাম। শবনমকে দেখলাম মহিলা মহলে। বার কয়েক চোখাচোখি হলো। তার ভাবসাব নির্লিপ্ত। মনটা খানিকটা আহত হলো। পরক্ষণেই লজ্জা পেলাম। কোথাকার কোন মেয়ে আজই প্রথম ফ্লাইটে পরিচয়। তার সংগ চাহিদা কি সংগত? অন্য কলিগ ও পরিচিতজনদের সাথে কথা বলছি আর চোখ রাখছি শবনমের ম্যুভমেন্টে। কালো ড্রেসে তাকে আরো গর্জিয়াস লাগছে। হঠাৎ তাকে আবিষ্কার করলাম একগাদা ইয়াং ডেলিগেটের সাথে। কিছু নেভী অফিসারকেও দেখলাম সেখানে। হাসির হল্লাতে শবনমকে দেখলাম স্যাটেলাইটের মত আলো ছড়াচ্ছে। বুকের খুব ভেতরে পৌরুষ হিংসা থেকে থেকে ফালি ফালি করে দিচ্ছে। লুবনার কথা মনে পড়লো। লুবনাকে নিয়েও এমন হয়েছিলো। কোন পুরুষ তার সাথে কথা বললে লাগত, বস ডেকে পাঠালে মেজাজ বিগড়ে যেত। দেরি হলে গোস্যা হত। এর ছাপ পড়ত তার সাথে আচরণে। একদিন খুলেই বললাম, “আজকাল অফিসে দেখছি তোমার অনেক ফ্যান-ফলোয়ার হয়েছে”।
— যেমন? লুবনার কৌতুহল।
— এই যে সবাই তোলা দিয়ে তোমার সাথে মাখো মাখো হয়ে কথা বলে।
— তো
— কাজ ফেলে প্রায় সময়েই নানা ছুঁতোয় আলাপের আয়োজন করে
— তো
— বসও দেখছি আজকাল ঘন ঘন ডাকে
— তো
— এই তো এসব দেখছি আরকি।
— জ্বলে?
— জ্বলে তো
— কেন?
— জানিনা
— এত কিছু নিয়ে ভাবো?
— না, শুধু তোমাকে নিয়েই ভাবি
— ভাবা বন্ধ করে দাও। দেখবে সব স্বাভাবিক লাগছে।
— পারছিনা তো
— ডাক্তার দেখাও। নইলে হার্ট উইক হয়ে যাবে।
সেমিনারে টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে পান্ডিত্যপূর্ণ আলোচনা চলছে। বেশিরভাগ লোকই ঘুমুচ্ছে। আজ ফেরার দিন। তাই, সব কিছুই কিছুটা ঢিলেঢালা। আমারও ঝিমুনি ভাব এসেছিলো। লুবনা আর শবনমকে নিয়ে ভাবাভাবিতে সে ভাব অনেকটাই কেটে গেছে। শবনমকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। ওয়াশরুমে যাবার উছিলা করে দেখে এলাম চারপাশ। কোথাও নেই। আশ্চর্য।
সেমিনার শেষ। যে যার স্কেজিউল মত ফ্লাইট ধরতে চলে যাচ্ছে। আমার ফ্লাইট রাত সাড়ে সাতটায়। পাঁচটা নাগাদ রওনা হয়ে গেলাম। সাথে স্থানীয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আছে। প্রটোকলের দায়িত্বে। ফ্লাইট আধাঘন্টা ডিলে। ভি আই পি লাউঞ্জে বসে আছি। টিভি মনিটরে ফ্লাইট অপারেশন স্কেজিউল দেখাচ্ছে। শবনমের কথা মনে হলো। তারও এই ফ্লাইটে যাওয়ার কথা। হয়ত এই এয়ারপোর্টেই আছে কোথাও। ক্রাফটে দেখা হলো। এবার আর একসাথে সীট পড়েনি। আমি তার অন্যপ্রান্তে। শবনমের পাশে একজনকে দেখলাম। সেমিনারে তাকে দেখেছি বলে মনে হলো না। আরো দেখলাম তারা বেশ হাস্যোজ্জ্বল ম্যুডে আছে। আমার সেই প্রাচীন ব্যামো পেয়ে বসলো। জীবনানন্দীয় উপলব্ধি মাথায় ভর করলো। কি এমন কথা তার সাথে? ভেবে পাচ্ছিনা। পরক্ষণেই মনে হলো কিসের মধ্যে কি! এতসব আবোল তাবোল ভাবছি কেন? লুবনার কথা মনে পড়লো। একদিন বলেছিলাম, “এত ভাল, ভালো না”।
— কি?
— বললাম সবার কাছে ভালো থাকার চেষ্টা ভালো না
— মানে কি? লুবনার বিস্ফোরণ
— এই যে সবাই তোমার সঙ্গ পেতে মেতে উঠেছে
— আশ্চর্য! এতে তোমার কি?
— কিছু না। ইটস লুক ওড
— দিস ইজ টু মাচ। কান্ট বিয়ার। ইউ নীড আ পার্মানেন্ট সায়াক্রিয়াট্রিস্ট। শেষের কথা দিয়ে সে কিসের ইঙ্গিত করলো বুঝলাম না।
ফ্লাইট মাঝ আকাশে। এখনো সেই ছেলে আর শবনম ননস্টপ হাস্যালাপ করে যাচ্ছে। এত হাসির কারণ কি? মাঝেমধ্যে চোখাচোখি হয়েছে। থতমত খেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছি। সামনে পেপার মেলে ধরা। চোখ সেখানে নিবদ্ধ। কিন্তু মন পড়ে আছে শবনমে।
চিটাগাং-ঢাকা ফ্লাইট যেন এই উঠা আর এই নামা। নামার সময় দেখা হলো। সেই ছেলে শবনমের বডি গার্ডের দায়িত্ব পালন করছে। কাছে গিয়ে বললাম, “সি ইউ সুন। টিল দেন বেস্ট অফ লাক”। সেই কথার প্রেক্ষিতেই শবনম সেই বডিগার্ডকে পরিচয় করিয়ে দিলো, “মিট মাই বেস্ট ফ্রেন্ড কামার জামান। নেভাল অফিসার”। ভদ্রতাসূচক হাই-হ্যালো হলো। গা জ্বলে যাচ্ছে। মন পুড়ে ছাড়খাড়। নিজেকে সামলে নিয়ে গাড়ীতে গিয়ে বসলাম। বুঝলাম লুবনার কথাই ঠিক। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। আমার এখন লুবনার মত একজনের সাথে গাঁটছড়া বাঁধা জরুরী হয়ে পড়েছে।